ডেস্ক রিপোর্টঃ
প্রতিবেশী ভারত তার পররাষ্ট্র নীতিতে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় বলে জানিয়েছেন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। সাক্ষাৎকারে তিনি আরো জানান, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করতে পারা ভারতের জন্য সর্বোচ্চ সম্মানের বিষয়। একাত্তরের জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে ভারত সব কিছু করবে। মুজিব বর্ষ, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনেও বাংলাদেশের প্রত্যাশা অনুযায়ী পুরোপুরি সম্পৃক্ত থাকবে ভারত।
সীমান্তে হতাহতের মতো স্পর্শকাতর ইস্যুতে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, অবৈধ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকলেও গুলিতে মৃত্যু তাদের প্রাপ্য নয়।
প্রশ্ন: জামাই বাবু তার স্ত্রীর আদি পুরুষের দেশে এসেছেন। জামাই বাবু এখন কেমন আছেন?
ভারতীয় হাইকমিশনার : এই দেশে এর আগেও আমার আসার সৌভাগ্য হয়েছে। কিন্তু এবার আপনাদের এই সুন্দর দেশে আমার স্ত্রীকে নিয়ে আসতে পারা নিছক সম্মানের বিষয় নয়।
ভারতীয় কূটনীতিক হিসেবে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার রাষ্ট্র বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করা আমাদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মানের। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে, আমি বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং আমার নিজের বাড়িতে এর অনেক প্রভাব দেখতে পাই। তাই আমি এখন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি, মনোভাবের গুরুত্ব, সম্মান জানানোর গুরুত্ব এবং আতিথেয়তার গুরুত্ব সম্পর্কে আরো বেশি জানতে ও বুঝতে পারি। এটি অবশ্যই পৃথিবীর সবচেয়ে অতিথিপরায়ণ স্থান।
প্রশ্ন: আপনি ত্রিপুরা থেকে সড়ক পথে বাংলাদেশে এসেছেন। এর পেছনে কি বিশেষ কোনো কারণ ছিল? ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য, বিশেষ করে ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদারে আপনার কি বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে? এটি কীভাবে উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক হতে পারে?
ভারতীয় হাইকমিশনার : কভিডের কারণে আমার আসার সুযোগ ছিল সীমিত। তবে আমি দৃঢ়ভাবেই ঠিক করেছিলাম, সড়ক পথেই ভারত থেকে বাংলাদেশে আসবো। কারণ ফ্লাইটযোগে বা আকাশ পথে তো আপনি যে কোনো স্থানে যেতে পারেন। ভারতীয় হিসেবে আমার জন্য খুব কম দেশই আছে যেখানে আমি আকাশ পথের বদলে সড়ক পথেও যেতে পারি।
সড়ক পথে বাংলাদেশে আসার অন্য একটি অর্থ আছে। এর মাধ্যমে আপনি দেখতে পারবেন—প্রতিদিন সেই পথ দিয়ে লোকজন যাতায়াত করে, তাদের সেই যাতায়াতটা কত সহজ; কানেক্টিভিটি কেমন সহজ, আর চারপাশের পরিবেশটাইবা কেমন। তাৎক্ষণিকভাবে আপনি বুঝতে পারবেন, আপনি কোথায় আছেন। তাই এটি অনেক অন্য ধরনের একটি অনুভূতি। হ্যাঁ, আমি সড়ক পথেই আসতে চেয়েছিলাম।
আমার নিজের অভিজ্ঞতা হলো, উত্তর পূর্বাঞ্চল, বিশেষ করে, ত্রিপুরা বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অংশীদারির ক্ষেত্রে অত্যন্ত আগ্রহী। ভারতের সবাই বেশ আগ্রহী। কিন্তু বিশেষ করে, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী, রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে প্রতিটি সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারি আরো বাড়াতে আগ্রহী হয়েছে। তাই ত্রিপুরা দিয়ে বাংলাদেশে আসার কারণ আছে।
বাংলাদেশিদের হৃদয়ে ত্রিপুরার জন্য আলাদা একটি স্থান আছে। আপনাদের মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই ত্রিপুরা বাংলাদেশের অত্যন্ত জোরালো সমর্থক ও সহযোগী ছিল। আমি সেই স্মৃতিকেও সম্মান জানাতে চেয়েছিলাম। এছাড়া ত্রিপুরায় আমাদের অনেক প্রকল্প আছে যেগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সংযুক্ত করছে। সাব্রুমের মৈত্রী সেতু থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে সোনামুড়া-দাউদকান্দি পণ্য পরিবহন শুরু হওয়া—এসব কিছু আমাদের সামনে আরো এগিয়ে যাওয়ার ভালো ভিত্তি গড়ে দিয়েছে। তাই সব দিক বিবেচনায় ত্রিপুরা দিয়েই এসেছি।
আমি আমার মেয়াদে প্রতিটি স্থলবন্দর, নদী বন্দর দিয়েই ভ্রমণ করতে চাই। ইতিহাস ও ভূগোল যে আমাদের একসঙ্গে করেছে তার আরো স্বীকৃতি প্রয়োজন। ঐতিহাসিকভাবেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সড়ক, রেল ও নদী পথে আজকের বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কানেক্টিভিটি বের করা কেবল মানুষে মানুষে যোগাযোগের জন্যই নয়, অর্থনীতির জন্যও ভালো। আপনি যদি এমন অংশীদারি চান যেখানে উভয় পক্ষের উন্নতি-সমৃদ্ধি হবে তাহলে উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে আমার স্ত্রীর পারিবারিক যোগসূত্র আছে। তাই, এ কারণেও আমি ওই পাশ দিয়