ডেস্ক রিপোর্টঃ
মাস্কসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
বুধবার (১২ আগস্ট) সকালে দুদক পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় তাকে মাস্ক, পিপিইসহ অন্যান্য সুরক্ষাসামগ্রীতে ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে জেরা করা হয়। এর আগে এসব অভিযোগে ঠিকাদার, কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সংস্থাটি। আগামীকাল আবুল কালাম আজাদকে রিজেন্ট হাসপাতালের জালিয়াতি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আজ রিজেন্ট হাসপাতালকে লাইসেন্স দেয়ায় জালিয়াতি এবং করোনা পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক বিভাগের ওসএসডি হওয়া পরিচালক ডাক্তার আমিনুল হাসান, একই বিভাগের উপ-পরিচালক ডাক্তার মোহাম্মদ ইউনূস আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন দুদকের পরিচালক শেখ মোহাম্মদ ফানাফিল্লাহর নেতৃত্বে আরেকটি টিম। এছাড়া, স্বাস্থ্যের সহকারী পরিচালক শফিউর রহমান, গবেষণা কর্মকর্তা দিদারুল আলমকেও জিজ্ঞাসাবাদের কথা রয়েছে। এন নাইন্টি ফাইভ মাস্ক কেলেঙ্কারি এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রিজেন্ট হাসপাতালকে অনুমতি দেয়ায় দুদক আলাদাভাবে দুটি অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে। এরইমধ্যে এসব দুর্নীতির অভিযোগে বেশকিছু নথিপত্র সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি।
গত ২১ জুলাই স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা আর অনিয়মের তুমুল সমালোচনার মধ্যে পদত্যাগ করেন সাবেক ডিজি আবুল কালাম আজাদ। এরপর ২৩ জুলাই তার স্থলাভিষিক্ত হন অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই নানা কারণেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন আবুল কালাম আজাদ। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে ব্যর্থতার পাশাপাশি কেনাকাটা ও নিয়োগে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি সামাল দিতে না পারাসহ নানা অব্যবস্থাপনার দায়ে ডা. আজাদকে নিয়ে সরকারি মহলসহ দেশব্যাপী সমালোচনা চলছিলো। স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন মহল থেকেই তার পদত্যাগের দাবি ওঠে। একের পর এক স্বাস্থ্য বিভাগের অব্যবস্থাপনার খবর সংবাদ শিরোনাম হয়। তবে, অব্যবস্থপনার সংবাদ ছাপিয়ে যায় করোনা মহামারিতেও স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির নানা চিত্র। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই মাস্ক, গ্লাভস, পিপিইসহ বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী কেনাকাটা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। প্রথমে এন-৯৫ মাস্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে দুর্নীতির বিষয়টি আলোচনায় আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নিম্নমানের মাস্ক ও পিপিই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এরপর টক অব দ্যা কান্ট্রি হয়ে ওঠে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি ও ভুইফোড় সংস্থা জেকেজিকে দিয়ে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একপর্যায়ে স্বাস্থ্যের ডিজি সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। এই দুই প্রতিষ্ঠানকে করোনাভাইরাস পরীক্ষা ও আক্রান্তদের চিকিৎসা করাতে কেন অনুমতি দেয়া হয়েছিলো ও তার করা মন্তব্যের বিষয়ে ডা, আবুল কালাম আজাদকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয় মন্ত্রণালয়। যথারীতি ব্যাখা দেন তিনি। দায় চাপান মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিবের ওপর। পরে, চিঠির ব্যাখ্যায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সন্তুষ্ট নয় বলে জানিয়ে আবারও তাকে চিঠি দেয়া হয়। সংবাদঃ ডিবিসি