ডেস্ক রিপোর্টঃ
এখন থেকে প্রতি মাসেই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা সরাসরি ব্যাংক হিসাবে দেবে সরকার। আগামী মাস থেকে নতুন এই ব্যবস্থায় ভাতা দেওয়া শুরু হবে। এতদিন তিন মাস অন্তর মুক্তিযোদ্ধারা ভাতা পাচ্ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানিমুক্তভাবে ভাতা পাওয়ার নতুন এই পদ্ধতি উদ্বোধন করার কথা। ইতোমধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় দেশের সকল জীবিত মুক্তিযোদ্ধা ও মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ উত্তরাধিকারীদের তথ্য ‘ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমআইএস)’ অন্তর্ভুক্ত করেছে। এতদিন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসকের কাছে ভাতার টাকা পাঠাত। এরপর জেলা প্রশাসকদের থেকে তা যেত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা দিতেন। এর ফলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নেতাদের মাধ্যমে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা হয়রানিতে পড়তেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় হয়রানি বন্ধ হবে।
এখন গভর্নমেন্ট টু পার্সন (জিটুপি) ভিত্তিতে সম্মানী ভাতার টাকা মুক্তিযোদ্ধার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সারাদেশের প্রায় এক লাখ ৯২ হাজার মুক্তিযোদ্ধার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসের শেষ সপ্তাহে মাসিক ভাতা পাঠানো হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ১২ হাজার টাকা ভাতা দেয় সরকার। এছাড়া বছরে দুটি উৎসব বোনাস দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা করে। এছাড়া জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় দিবসে ৫ হাজার টাকার সম্মানী পান। বৈশাখী ভাতা হিসেবে দেওয়া হয় ২ হাজার টাকা। এখন থেকে সকল সুবিধাই সরাসরি ব্যাংক হিসাবে জমা করা হবে। ভাতার টাকা জমা হওয়ার পর তা মুক্তিযোদ্ধার মোবাইল নম্বরে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে জীবিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা এক লাখ। ৯২ হাজার মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন। মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারীদের (বাবা, মা, স্ত্রী, সন্তান, ভাই, বোন) এই ভাতা দেওয়া হয়। এতদিন উত্তরাধিকারী একাধিক ব্যক্তি হলেও একজনের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হতো। এখন থেকে যে ক’জন উত্তরাধিকারী আছেন, তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা অ্যাকাউন্টে প্রাপ্য অনুযায়ী ভাতা দেবে সরকার।
এছাড়া সকল মুক্তিযোদ্ধা এখন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রে যে নাম রয়েছে সেই নামে ভাতা পাবেন। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৩৩ ধরনের নথিতে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম রয়েছে। দেখা গেছে, একজন মুক্তিযোদ্ধার একেক নথিতে একেক ধরনের নাম। এজন্য ঠিক হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের নথিতে যে নামই থাকুক এখন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের নামে মুক্তিযোদ্ধার নাম, ঠিকানা ও জন্মতারিখ বিবেচনা করা হবে। কোনো মুক্তিযোদ্ধার জন্মতারিখসহ অন্যান্য তথ্য সংশোধনের দরকার হলে তা আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে করতে হবে।