কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি প্রত্যাহারকৃত টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহার হওয়া উপ-পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ সাত আসামী আত্মসমর্পণ করলেও দুই আসামী আত্মসমর্পণ করেনি এখনো। এই দুই আসামী হলেন প্রত্যাহার হওয়া উপ-পরিদর্শক টুটুল ও কনস্টেবল মোস্তফা। তারা ৮নং ও ৯ নং এজাহারনামীয় আসামী।
কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ফরিদুল আলম আদালত কক্ষ থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, মেজর সিনহা হত্যা মামলায় নয়জন এহাজার নামীয় আসামী রয়েছে। কিন্তু প্রধান আসামী ও দুই নং আসামী সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ সাত আদালতে হাজির হয়। বাকি দুই আসামী আদালতে উপস্থিত হননি। তবে তারা উপস্থিত হন বা তারা পলাতক সে ব্যাপারেও আদালতে আলোচনা হয়নি।
কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ফরিদুল আলম জানান, সাবেক প্রদীপসহ সাত আসামী আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। আসামিদের পক্ষে এডভোকেট মোহাম্মদ জাকারিয়া এবং বাদী পক্ষে এডভোকেট রাখাল চন্দ্র মিত্র জামিন আবেদন শুনানি করেন। রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন আদালত পরিদর্শক প্রদীপ কুমার দাশ। টেকনাফ (আদালত নম্বর-৩) জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন আসামীদের নিয়োজিত আইনজীবীদের জামিন আবেদন শুনানি করে আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। তবে বাকী দুই আসামীদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
তবে আসামী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেছেন, মামলায় উল্লেখিত ৮নম্বর আসামী এসআই টুটুল এবং ৯ নম্বর আসামী কনস্টেবল মোঃ মোস্তফা নামে কোন পুলিশ সদস্য জেলা পুলিশে নেই।
জানা গেছে, সাবেক ওসি প্রদীপ সহ নয় আসামীকে টেকনাফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (আদালত নম্বর-৩) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের আদালতে আসামীদের তোলা হয় এবং তাদের আইনজীবি তাদের জামিন আবেদন করেন। পরে দীর্ঘ এক ঘণ্টা শুনানী হয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা রাশেদ খান। এই ঘটনায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন ও নিরাপত্তা বিভাগ। একইভাবে তদন্তের স্বার্থে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলিসহ ১৬ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এই ঘটনায় বুধবার দুপুরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলাটির শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে তা ‘ট্রিট ফর এফআইআর’ হিসেবে আমলে নিতে টেকনাফ থানাকে আদেশ দেন আদালতের বিচারক। আদালতের নির্দেশে টেকনাফ থানায় বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মামলাটি রুজু হয়। দণ্ডবিধি ৩০২, ২০১ ও ৩৪ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর সিআর: ৯৪/২০২০ইং/টেকনাফ।