নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে সালিশে চোরের বিচার চাওয়ায় চাচাতো ভাই ও বড় ভাইয়ের ছেলেকে দা
দিয়ে কোপিয়ে গুরুত্বর আহত করেছে মাতব্বর আবুল খায়ের শিপন। উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ
ইউনিয়নের হাড়পাকনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে মুরাদনগর থানায় বাদী হয়ে একটি
মামলা করেছে ভাতিজা নাজমুল হাসান।
মাতব্বর আবুল খায়ের শিপন (৪২) হাড়পাকনা গ্রামের মৃত জসিম উদ্দিন সওদাগরের ছেলে।
অপরদিকে আহত জামাল মিয়া (৩২) শিপনের চাচা ছন্দু মিয়ার ছেলে ও নাজমুল হাসান (৩০)
তার বড় ভাই গোলাম ফারুকের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (১৪ই আগষ্ট) অভিযুক্ত মাতব্বর আবুল খায়ের শিপন
একই গ্রামের জালাল মিয়ার বাড়ীতে চোরের সালিশ করতে জান। সেখানে তার চাচাতো ভাই
জামাল ও বড় ভাইয়ের ছেলে নাজমুল হাসান সালিশে চলমান চোরের বিচারের পাশাপাশি কয়েক
দিন আগের তিনটি চুরির বিচার চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মাতব্বর শিপন। এ নিয়ে তাদের
মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হলে শিপন ও তার লাঠিয়াল বাহিনী জামাল ও নাজমুল হাসানকে বেধরক
পিটিয়ে আহত করেন।
খবর পেয়ে জামাল ও নাজমুলের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে
তাদেরকে উদ্ধার করে মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমল্পেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে আবারো দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র
নিয়ে তাদের উপর হামলা চালান শিপন ও তার বাহিনী। একপর্যায় শিপন দা দিয়ে জামালের
মাথায় কোপিয়ে তাকে গুরুত্বর আহত করে। জামাল ও নাজমুলের পরিবারের লোকজন বহু কষ্ট করে
তাদেরকে সেখান থেকে উদ্ধার করে মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমল্পেক্সে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওনদিন
রাতেই নাজমুল হাসান বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় শিপন ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে একটি
অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের পর থেকে শিপন ও তার বাহিনীর লোকজনকে এলাকায় না
দেখা গেলেও তারা প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জামাল ও নাজমুলে পরিবারের
লোকজনকে অভিযোগ উঠিয়ে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
তবে এতো বড় একটা ঘটনা ঘটার পরেও স্থানীয়রা ভয়ে শিপন তার লাঠিয়াল বাহিনীর বিরুদ্ধে
মুখ খুলতে রাজি হননি কেউ।
আহত জামাল বলেন, শিপন এলাকায় টাকার বিনিময়ে এমন কোন অপকর্ম নেই যে সে করেনা।
টাকা না পেলে নানা অজুহাতে নিরিহ লোকদের পুলিশে খবর দিয়ে ধরিয়ে দেয়। পরে টাকা
পেলে আবার সে নিজেই থানায় গিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। কিছু দিন যাবৎ
আমাদের গ্রামে বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটে। সালিশ ডেকে তাদের বিচার করার কথা
থাকলেও রহস্যজনক কারণে চোরদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থ নেয়নি মাতব্বর শিপন। পরে
খবর পাই সে চোরদের কাছ থেকে মাসোহারা নেয়, যার ফলে তাদের কোন বিচারের সম্মক্ষিণ
হতে হয় না। ঘটনার দিন আমি এবং ভাতিজা নাজমুল হাসান নতুন একটি চুরির ঘটনায়
বিচার চাইতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে শিপন। পরে শিপন ও তার লাঠিয়াল বাহিনী দফায় দফায় আমাদের
উপর আক্রমণ চালায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) নাহিদ আহম্মেদ কুমিল্লা টাইমসকে বলেন, এ ঘটনায়
নাজমুলের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্ত আসামীদের
ধরতে আমাদের পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।