বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন বাংগরা গ্রামের পরকীয়ায় প্রেমিকের হাত ধরে সাহিদা বেগম (৩২) নামে এক লেবানন প্রবাসীর স্ত্রী পলায়নের ঘটনা ঘটেছে।
গত মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বাঙ্গরা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। সে মুরাদনগর উপজেলার মুরাদনগর থানার পরমতলা গ্রামের মোঃ আবুল খায়েরের মেয়ে এবং বাঙ্গরা গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে লেবানন প্রবাসী মোঃ ফারুকের স্ত্রী।
পরকীয়া প্রেমিক খলিলুর রহমান ইমন ইউনিয়নের বাংগরা গ্রামের মৃত ওমর ফারুকের বড় ছেলে।
এ ঘটনায় গত বুধবার (৩/২/২০২১) লেবানন প্রবাসী মোঃ ফারুক তার স্ত্রীর সাহিদা বেগম এর নামে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি লিখিত নিখোঁজ ডায়রি দায়ের করেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, খালিলুর রহমান ইমন একজন বিমান বাহিনীর সদস্য ও প্রবাসী মোঃ ফারুকের ফুফাতো ভাই এবং পাশের বাড়ির হওয়ার সুবাদে সাহিদা বেগমের স্বামীর বাড়ীতে ইমন ছুটিতে আসলেই সাহিদার কাছে যাওয়া আসা করতো। সাহিদা বেগমের স্বামী দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার কারণে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে উঠে। এমনকি তাদের সাথে বিভিন্ন সময় মুঠোফোনে কথপোকথন সহ অবৈধ মেলামেশা হতো।
গত ২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে সাহিদা বেগম কাউকে কিছু না বলে ঘরে থাকা ৩,৫০,০০০ লক্ষ টাকা ও পাচঁ ভরি স্বর্ণ অলংকার নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে যায়। বাড়ী ফিরতে দেরি করলে স্বামী প্রবাস ফিরত মোঃ ফারুক এদিক সেদিক খোঁজা খুজিঁ করতে থাকে। পরে প্রবাসী মোঃ ফারুক তার বড় মেয়ে ফারিয়া আক্তার (১৩) জানায় বেশ কিছু দিন যাবৎ আম্মা কে দেখি ইমন কাকার সাথে মোবাইলে দীর্ঘ সময় কথা বলতে এবং তোমার কাছে খুব দ্রুত সময়ে সুযোগ বুঝে চলে আসবো শুনতে।
পরে প্রবাসী ফারুক আসে পাশের বাড়ির মহিলারা জানান সাহিদা বেগম দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ গভীর রাত পর্যন্ত মোবাইলে কারো সাথে কথা বলতে দেখেছে। তারা আরও জানায় তোমার ফুফাতো ভাই ইমন বাড়িতে আসলেই দেখতাম তোমার বৌয়ের সাথে দীর্ঘ সময় কাটাতে এবং হাসিতামাসা করতে। রান্না বান্না দেখে মনে হত কোন বিশাল আয়োজন। ইমনের মা ফুফু রোসনা ও ছোট ভাই শান্ত, বোন নয়ন কে নিয়ে খাওয়া দাওয়া ও মুজমাস্তি করতো।
তখন প্রবাসী ফারুক ফুফাতো ভাই স্ত্রী সাহিদার পরকীয়া প্রেমিক ইমনের নাম্বারে ফোন দিলে মোবাইল বন্ধ পায় এবং তার কর্মস্থল ঢাকা ডিজিএফআই হেডকোয়াটারস (এয়ারবেস বাসার) ফোন করে জানতে পায় পরকীয়ার প্রেমিক ইমন ১/২/২০২১ তারিখ থেকে ছুটিতে আছে। খুজ নিয়ে জানতে পারি তার স্ত্রী পরকীয়া প্রেমিক খলিলুর রহমান ইমনের সাথে পলায়ন করেছে এবং এক সাথে আছে।
পরে প্রবাসী মোঃ ফারুক স্ত্রী সাহিদা বেগম ও তার প্রেমিক ফুফাতো ভাই খলিলুরহমান ইমন এবং ইমনের ছোট ভাই শান্তকে বিবাদী করে কোর্টে একটি সি আর ৫৭/২১ একটি মামলা দায়ের করে।
স্বামী প্রবাসী মোঃ ফারুক নগদ ৩,৫০,০০০ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে স্ত্রী সাহিদা বেগম তার প্রেমিক ইমনের পরামর্শে পলায়ন করেছে উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করে।
অন্যদিকে সাহিদা বেগমের পরিবারের লোকজন তাদের মেয়েকে ফিরিয়ে না দিলে প্রবাসী মোঃ ফারুকের বড় ধরনের ক্ষতি করবে এমন হুমকি দিচ্ছে মর্মে সাংবাদিকদের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন।
ইমনের মা ফুফু রোশনা বেগম বলেন, সোমবার অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ী আসার কথা থাকলেও না আসায় ফিরতে দেরি হলে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সে সাহিদা বেগম কে নিয়ে পালিয়েছে। এর পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাচ্ছি। আমি জানতাম ভাতিজা বৌ সাহিদার সাথে ইমনের ভালো সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু কোনদিন ভাবিনি সে এমন জঘন্য কাজ করে ফেলবে। সাহিদার স্বামী প্রবাসী মোঃ ফারুক লোকজন দিয়ে বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। আমি কি করবো বুঝতে পারছি না।
প্রবাসী ফারুক বলেন, মঙ্গলবার সকালে আমি কাজে চলে যাবার পর বাড়ী থেকে কাওকে কিছু না বলে আমার স্ত্রী সাহিদা বেগম পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় আমার ঘরে থাকা ৩,৫০,০০০ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। আমি দুইজনের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেছি।
বাঙ্গরা গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা শেখ জাকির ও আলমগীর মেম্বার বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি এবং আমরা এটার সমাধান করার চেষ্টা করছি। ইমন ও সাহিদা বেগমের সম্পর্ক আছে বলেও আমরা জানতে পেরেছি। তারা কোথায় আছে সেটার সন্ধান চালানো হচ্ছে। যদি তারা স্বেচ্ছায় ফিরে আসে তাহলে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়া হবে বলে যানায়।
বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, সাহিদা বেগম নিখোঁজ এই মর্মে থানায় একটি নিখোঁজ ডাইরি দায়ের হয়েছে। তারা কোথায় আছে সেটার সন্ধান চালানো হচ্ছে।