অনলাইন ডেস্কঃ
আজ পবিত্র আশুরা। আজ ১০ মুহাররম। রক্তাক্ত কারবালাসহ বিভিন্ন ঘটনার সাক্ষী এই দিনটি যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে পালন করছে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা। রোজা রাখাসহ নানা আনুষ্ঠানিকতায় মুসলিম বিশ্বে এই শোক ও ত্যাগের দিনটি পালিত হয়।
আরবি হিজরি সন অনুসারে ১০ মুহাররম কারবালায় ফোরাত নদীর তীরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শাহাদৎবরণ করেন ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর দৌহিত্র ইমাম হোসেন (রাঃ)। তার এই মৃত্যুর দিনটি সারাবিশ্বের মুসলমানরা ত্যাগ ও শোকের দিন হিসেবে পালন করে।
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, বিশ্বের প্রথম মানব হযররত আদম (আঃ)-এর সৃষ্টি, মহাপ্লাবনে হযরত নূহ (আ.) এর নৌযাত্রাসহ বিভিন্ন ঘটনাও এই ১০ মুহাররম তারিখে সংগঠিত হয়েছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে কারবালার বিয়োগাত্মক ইতিহাস পালনই মুসলিম বিশ্বে অনেকটা প্রধান হয়ে উঠেছে।
‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ ধ্বনিতে সারা বিশ্বের মুসলমানরা (বিশেষত শিয়া) শোকের আবহে এই দিন তাজিয়া মিছিল বের করেন। মূলত ইমাম হোসেন (রাঃ) এর সমাধির প্রতিকৃতি নিয়ে বের করা হয় এই মিছিল। আরবি ‘তাজিয়া’ শব্দটি শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করতে ব্যবহার করা হয়।
তবে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বৈশ্বিক মহামারীর কারণে এবার বড় কোনো আয়োজন করা হচ্ছে না। নেই তাজিয়া মিছিলের আয়োজনও। আজ সকাল ১০টার দিকে ঢাকার হোসাইনি দালানের অভ্যন্তরেই সীমিত পরিসরে থাকছে তাজিয়া মিছিল। এরপর হবে নামাজ। রাতে জিকির-মাতমের মধ্যদিয়ে আশুরার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
হোসাইনি দালান ইমামবাড়ার প্রশাসনিক কর্মকর্তা এম এম আসলাম জানান, হোসাইনি দালান ইমামবাড়ার ভেতরেই সকাল ১০টায় র্যালি হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সকলে এখানে অংশগ্রহণ করবেন।
এছাড়া পবিত্র আশুরা উপলক্ষে গতকাল ২৯ আগস্ট, শনিবার জোহরের নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাত করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ এই আয়োজনে পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক জিলানী।
এদিকে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আশুরা উপলক্ষে সব ধরনের তাজিয়া, শোক ও পাইক মিছিল নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইমামবাড়াগুলোতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা যাবে বলেও জানিয়েছে তারা। কিন্তু এসব অনুষ্ঠানস্থলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি বহন এবং আতশবাজি ও পট্কা ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে