অনলাইন ডেস্কঃ
মাদকসেবী স্বামীর অত্যাচারে ঘর ছেড়ে বাবার বাড়িতে অবস্থান করেন স্ত্রী। স্বামীর অত্যাচারে স্ত্রী বাড়িতে না আসায় দুই সন্তানকে চেয়ারের সাথে বেঁধে মারধর করে তা ভিডিও করে স্ত্রীকে পাঠায় স্বামী। সম্প্রতি শিরিন সুলতানা নামের ওই গৃহবধূ ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সোমবার (২০ জুলাই) ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধানহাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, নিজের দুই সন্তানকে চেয়ারের সাথে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারছে তার পিতা। সেই সাথে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ‘বলছে তোর মা আমার কথা শোনে না কেন’ এছাড়াও সন্তানকে দিয়ে ঘর মোছানোর কাজ করাচ্ছেন।
জানা যায়, সদর উপজেলার ধানহাড়িয়া গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান শিমুলের সাথে ২০০৬ সালে বিয়ে হয় শিরিন সুলতানার, শিরিন সুলতানা শহরের আরাপপুর এলাকার। তাদের ২ টি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে নানা কারণে শিরিনকে মারধর ও অত্যাচার করে আসছিল শিমুল। অত্যাচার সইতে না পেরে সন্তানদের রেখে বাবার বাড়িতে চলে যায় শিরিন। ২ বছর আগে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়। তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে আবার বাড়ি ফিরে যাওয়ার দাবিতে সন্তানদের মারধর ও নির্যাতন করে পিতা শিমুল।
এ ঘটনার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করে শিরিন বলেন, বিয়ের পর থেকে সে আমাকে প্রায়ই মারধর করত। কয়েক বার শালিস বৈঠক করে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আবারো মারধর করেছে। এ জন্য তাঁকে তালাক দিয়ে চলে এসেছে। এখন আবার ফিরে নেওয়ার জন্য আমার সন্তানদের মারধর করছে এবং তা ভিডিও করে আমার কাছে পাঠাচ্ছে।
ফেসবুকে দেওয়া তার স্ট্যাটাসটি হলো-
আমার বাসা আরাপপুর ঝিনাইদহ। এই বাচ্চা দুইটা আমার। এদের বাবার অত্যাচারের কারণে আমি চলে এসেছি বাবার বাড়ি। ওরা ওদের দাদা দাদীর সাথে থাকে। মাঝে মাঝে আমার কাছে আসতো। ফোনে কথা হতো। কিন্তু এখন ওদের বাবা এরকম অত্যাচার শুরু করেছে। ভিডিও করে আমার কাছে পাঠায়। আমি বাচ্চা কাছে রাখছিলাম কিন্তু জোর করে নিয়ে গেছে। বাসায় এসে ভাঙাচুরা করে। আমার কোনো ভাই নাই, বাবাও অসুস্থ। বাচ্চা মানুষ করার সামর্থও নাই আমার। তাই জোরও করতে পারি না। কিন্তু এখন অত্যাচারের পরিমাণ এতো বেড়ে গেছে যে আমার বাচ্চারা ওখানে থাকলে মরে যাবে। আমাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমি বাইরে যেতে পারছি না। এমন কি আমার শ্বশুরও বলেছে ফোন করে, আমি গেলে আমাকে খুন করে ফেলবে। ওদের বাবা নেশা করে। মাথার ঠিক নাই। কাজ করে না। এমন অবস্থায় আমি খুব নিরাপত্তাহীনতাই ভুগছি। আমি আমার বাচ্চাদেরকে আমার কাছে রাখতে চাই। এবং ওর শাস্তি দাবি করছি। আপনারা আমাকে সাহায্য করেন। ওর নাম হাবিবুর রহমান শিমুল। বাসা ধানহাড়িয়া, চুয়াডাঙ্গা। ঝিনাইদহ। পিতা লিয়াকোত আলী।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ছেলে ২টিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পিতা শিমুলকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।