সোহেল রানা,যশোর প্রতিনিধিঃ
হার্ডে ছিদ্র নিয়ে পৃথিবীর বুকে জন্মগ্রহণ করেছিলো আলো নামের ছোট্ট একটি শিশু।মাত্র ৭ মাস বয়সে আলোর পিতা-মাতা উপলব্ধি করেন তাদের অতি আদরের কণ্যা শারীরিক ভাবে অসুস্থ।
বুকে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে পাশাপাশি তীব্র ব্যাথায় কান্না করছে প্রায় সময়। অনেক ডাক্তার কবিরাজের কাছে অর্থ ব্যায় করেও কোন সুরাহ না পেয়ে আল্লাহ তাআলার কাছে মেয়ের সুস্থতা কামনা করে দিন পার করছে অসহায় মা-বাবা।
খবরটি ছড়িয়ে পড়লে রবিবার শিশু আলোর দীর্ঘ দুই বছর ৮ মাস বয়সে এসে আলোর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন যশোরের ঝিকরগাছা ও শার্শা উপজেলার কয়কটি সংগঠন।
সরেজমিনে জানা যায়,যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের কামারপাড়া গ্রামের দিন মজুর কৃষক মোশারফ হোসেন ও ফাতেমা বেগমের একমাত্র মেয়ে আলো।হার্ডে ছিদ্র নিয়ে পৃথিবীর বুকে এসে মা বাবার কোল আলোকিত করলেও আলোর ছিটেফোঁটা ঝলকানিটুকু নেই অসহায় পরিবারের মাঝে।
মাত্র ৭ মাস বয়সে হার্ডে ছিদ্র ধরা পড়ার পর থেকে গরীব মা-বাবা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এবং কবিরাজী ঔষধ মেয়ে আলোকে খাওয়ায়েও কোন ফলাফল পাননি।
মেয়ে আলোর জীবন থেকে আলো যেন না নিভে যায় তার কারনে সর্বশেষ ঢাকাস্থ বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক রোকনুজ্জামান সরোনাপন্ন হলে তিনি কয়েক চালান ঔষধ দিয়ে আলোকে সুস্থ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
পরিশেষে অপারেশনের পরামর্শ দেন আলোর বাবা মাকে। কিন্তু অপারেশন সহ যাবতীয় চিকিৎসা ব্যায়ের কথা শুনে ভেঙ্গ পড়েন আলোর গরীব বাবা- মা। তিনি জানান আলোর শুধু অপারেশন ব্যায় হবে কমপক্ষে দেড় লাখ টাকা। যে খরচ যোগান দেওয়া এই মুহুর্তে সম্ভব না বলে জানান আলোর পরিবার। অর্থাভাবে আল্লাহ তাআলার কাছে মেয়ের সুস্থ্যতা কামনা করে দিন রাত পার করতে থাকেন আলোর গরীব বাবা মা।
এমতাবস্থায় দীর্ঘদিন অতিবাহীত হওয়ার পরে আলোর বাবা মায়ের কুঁড়ে ঘরে আলোর রশ্মি ফিরিয়ে আনতে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার সেবা সংগঠন, ব্লাড ব্যাংক, যশোর উদিচি শিল্প গোষ্ঠীর ঝিকরগাছা শাখা এবং শার্শা থেকে দেশসেরা উদ্ভাবক মিজানুর রহমানের উদ্যোগে মানব সেবা হেল্প ফাউন্ডেশন ও মিতালী সংঘের মাঠ পর্যায়ের কর্মঠ ব্যক্তিরা এগিয়ে আসেন।
নগদ অর্থ তুলে দেন আলোর বাবা মার হাতে।
সেবা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আশরাফুজ্জামান বাবু, ব্লাড ব্যাংকের সভাপতি ইমরান হুসাইন, তরুণ সমাজ সেবক বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন, তরুন সমাজ সেবক উজ্জ্বল হোসেন, উদিচী শিল্পী গোষ্ঠীর ঝিকরগাছা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহীন আহমেদ এবং দেশসেরা উদ্ভাবক মিজানুর রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় এই অর্থ তুলে দেওয়া হয়।
সেই সাথে আলোর পরিবারের মাঝে সংগঠন গুলোর পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এসময় সংগঠন গুলোর সাথে সার্বক্ষণিক সময় ব্যায় করেন ৩ নং কামার পাড়া ইউপি সদস্য আসাদুল ইসলাম। সামাজিক সেবা মূলক কাজে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাওয়া এ সকল সংগঠনের কর্মকর্তারা বলেন, পরিবারের অন্ধকারময় জীর্ণদশা কাটাতে আলোর জীবনের আলো ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরী। তাই এই কার্যক্রমে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি।
একমাত্র মেয়ে আলোর জীবনের আলো যেন না নিভে যায় এবং অন্য সব সাধারণ মানুষের মতো যেন আলো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে সেই জন্য সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট সাহায্যের আবেদন করেন আলোর বাবা মা সহ পরিবারের সদস্য এবং সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।