ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
প্রবাসীর স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে সরাইল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ মো. রাসেল মিয়া (২৭) ও বাঁধন মিয়াকে (২০) গ্রেফতার করেছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।
মামলা ও গৃহবধূর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সরাইল উপজেলা সদরের নিজ সরাইল গ্রামের রুমেলের বাড়িতে ওই গৃহবধূ ভাড়া থাকতেন। বিয়ের দেড় মাস পরই স্ত্রীকে রেখে ওই গৃহবধূর স্বামী মালয়েশিয়ায় চলে যান। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে প্রায়ই ওই নারীর মোবাইল ফোনে অডিও-ভিডিও কথা হতো। স্বামীর ইচ্ছায় বিভিন্ন ধরনের ছবিও পাঠাতেন। তার বিকাশ নম্বরে স্বামী টাকা পাঠাতেন। নিজেই টাকা উত্তোলন করতেন। কয়েক মাস আগে গৃহবধূ অসুস্থ হওয়ায় স্বামীর অনুমতিক্রমে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি রুমেল মিয়াকে দিয়ে বিকাশের টাকা উত্তোলন করান। এভাবে বেশ কয়েকবার টাকা উত্তোলন করে মোবাইল ফোন সেটটি ফেরত দেয় রুমেল। সুযোগে পেয়ে রুমেল মোবাইল সেট থেকে গৃহবধূর ব্যক্তিগত ছবিগুলো কপি করে রেখে দেয়।
আনুমানিক ৫/৬ মাস আগে রাসেল, বাঁধন, রুমেল ও আশিকসহ ৪-৫ জন ফোন করে রুমেলের কাছে ওই গৃহবধূর ছবি থাকার বিষয়টি জানায়। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ারও হুমকি দেয় তারা।
সম্মান বাঁচাতে পরে স্বামীর সঙ্গে কথা বলে ওই গৃহবধূ হুমকিদাতাদের ৫০ হাজার টাকা দেয়। এরপরেও তারা গৃহবধূকে ফোন করে কুরুচিপূূর্ণ কথাবার্তা বলে এবং আরও টাকা দাবি করে। দাবি না মানলে এসব ছবি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে তারা গৃহবধূর মোবাইল ফোন থেকে নেওয়া ব্যক্তিগত ছবিগুলো এডিট করে রুমেলের ছবির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়।
পরে ওই গৃহবধূ স্বামীর বাড়ি থেকে জেলা শহরে বাবার বাড়িতে চলে যায়। গত মঙ্গলবার ওই গৃহবধূ নিজসরাইল গ্রামে তার স্বামীর বাড়িতে এলে রুমেল মিয়া তাকে গালাগালি করে এবং আরও টাকা না দিলে ছবিগুলো দ্রুত ভাইরাল করার হুমকি দেয়। এ ঘটনার পর গৃহবধূর পিতা বাদী হয়ে সরাইল থানায় মামলা দায়ের করেন।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এম এম নাজমুল আহমেদ বলেন, আসামিরা ব্ল্যাকমেইলিং করে ওই মহিলার পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা দুই জনকে গ্রেফতার করেছি। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।