নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কুমিল্লায় ৭ মাসের শিশুকে কোলে নিয়ে আত্মসমর্পন করেছিলেন এক মা। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে ২দিনের রিমান্ডের মুখোমুখীও হন ওই মা। বুধবার ১৫দিন জেলে খেটে মায়ের জামিনে মুক্তি পেলেন ৭ মাসের ওই শিশু মাহাদী হাসান মাহির।
জানা যায়, দেবরের স্ত্রীর আত্মহত্যা ঘটনায় হত্যার অভিযোগে মামলায় শিশু মাহাদী হাসানের মা শাহনাজ আক্তার আদালতে আত্মসমর্পন করে। পরে বিচারক শিশুপত্রসহ শাহানাজ আক্তারকে কারাগারে প্রেরণ করেন।
জামিনের আবেদনে বুধবার (৪ নভেম্বর) শিশুসহ মাকে আদালতে হাজির করানো হয়। এইদিন সকালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামসহ ঢাকা থেকে কয়েকজন আইনজীবী একটি মামলা শুনানির জন্য কুমিল্লা কোর্টে যান। মামলা পরিচালনার সময় কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভিতরে দেখেন একটি শিশু কাঠগড়ার মধ্যে গড়াগড়ি করছে। আবার কখনও কান্না করছে। তখন তাদের নজরে পড়লে তারা শিশুসহ ওই মাকে জামিনের জন্য বিচারকের মুখোমুখী হন। পরে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আতাব উল্লাহ শিশুসহ মা শাহনাজ আক্তারকে জামিন প্রদান করেন।
জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলায় আসামী পক্ষের আইনজীবি এড. আক্তার হামিদ খান কবির। তিনি জানান, গত ২০১৮সালের ১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা নগরীর মনোহরপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন গৃহবধূ আয়েশা আক্তার রীমা। এই মৃত্যুর ঘটনায় গৃহবধূ আয়েশার বাবা তার স্বামী নাসির উদ্দিন, ভাসুর মাসুম ও তার স্ত্রী শাহনাজ বেগমকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় গত ১৯ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পন করেন শাহনাজ বেগম। এসময় তার কোলে ৭ মাসের শিশুসহ আসামীকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি এ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, চিকেন পক্সে আক্রান্ত শিশুকে নিয়ে মা শাহানাজ বেগম ১৫ দিন কারা বরণ করেছেন। এর মধ্যে মামলায় শিশুকে কোলে রেখে রিমান্ডের মুখোমুখিও হতে হয়েছে তাদের। আমার তদন্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা এটা অন্যায় করেছে। করোনাকালীন সময়ে তাদের জামিনের ব্যাপারে দায়িত্ব নিয়ে সাহায্য করা উচিত মনে করেছি। বিচার আমাদের কথা শুনে শিশুর মা ও বাবাকে জামিন প্রদান করেছেন।
জামিন শুনানিতে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি এ্যাডভোকেট জুবায়ের হোসেন, কুমিল্লা কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট বদিউল আলম সুজন।