বাঙ্গরাবাজার থানা প্রতিনিধিঃ
সরকারি জমিতে সাইবোর্ড টানিয়ে ব্যাক্তি মালিকানা জমি দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আরো অভিযোগ পাওয়া গেছে একই জমি থেকে মূল্যবান গাছ কেটে নেয়ার। বর্তমানে একটি চক্র ওই জমি মাটি দ্বারা ভরাট করার পাঁয়তারা করছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরাবাজার থানাধীন আকুবপুর ইউনিয়ন এর ঘোড়াশাল গ্রামে। এবিষয়ে ভূমি অফিসে অভিযোগ করলেও রহস্যজণক কারনে কার্যকর কোন পদক্ষেন নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্ত আব্দুর রহিম পাশের গ্রাম মোহাম্মদপুরের মৃত চান মিয়ার ছেলে।
অভিযোগকারী আবু ছায়েদ বলেন, আমার জমির সামনে দিয়ে সরকারি হালট আছে। এ হালটের জমির আস-পাশের মালিকরাই ব্যাবহার করার কথা। কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে রাস্তায় এসে দেখি পাশের গ্রাম মোহাম্মদপুরের আশিকুর রহমানের নামে রাস্তার পাশে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়া হয়। সাইনবোর্ডটিতে লিখা ছিলো “দখল সূত্রে ১৫০ বছর মালিক সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেড, মোঃ আশিকুর রহমান, জমির পরিমান ১০ শতাংশ, মৌজাঃ ১৪ নং (মেটাংঘর), ঘোড়াশাল, কুমিল্লা”।
উপরোক্ত সাইনবোর্ডটি সরিয়ে এর তিন-চারদিন পর তাঁর বাবা আব্দুর রহিমের ক্রয় সূত্রে ৪ শতক জমির মালিকানা দেখিয়ে অন্য আরেকটি সাইনবোর্ড টানায়। একটি চক্র প্রভাব খাটিয়ে একেক সময় একেক সাইনবোর্ড ব্যাবহার করে কিছুদিন পূর্বে সরকারি জমি থেকে একটি মূল্যবান মেহগনি গাছও তারা কেটে নেয়। বর্তমানে ওই জমি মাটি দিয়ে ভরাট করার পায়তারা করছে তাঁরা। এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসে গত ২৬ এপ্রিল অভিযোগ করলেও তাঁরা কি কারণে ব্যাবস্থা নিচ্ছে না, তা আমার জানা নাই।
আকুবপুর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক সোহাগ জানান, বিষয়টি তার নজরে আসার পরে সাথে সাথেই তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে সাইনবোর্ড সরিয়ে নিতে বলেন। বিষয়টি তিনি লিখিত ভাবে এসিল্যান্ডের কাছে জানিয়েছে বলে জানান।
সরেজমিনে গেলে নাম প্রকাশে না করার শর্তে বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জান যায়, জমিটি রাস্তার পাশে হওয়ায় বর্তমান বাজার মূল্য অনেক। তাই ঘোড়াশাল গ্রামের মৃত রাহাত মিয়ার ছেলে হোসেন মিয়া, মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে জাকির হোসেন, মৃত সোনা মিয়ার ছেলে সবুর মিয়ার যোগসাজসে একই গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে জালাল মিয়েকে দখল করে দেয়ার পরিকল্পনা করে।
পাশের মোহাম্মদপুর গ্রামের আশিকুর রহমানের নামে প্রভাব খাটিয়ে ওই সরকারি জমিতে একটি সাইনবোর্ড লাগায়। এ নিয়ে এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে রাতের অন্ধকার ওই সাইনবোর্ড সরিয়ে তাঁর বাব আব্দুর রহিমের নামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে জমির মালিকানা দাবি করেন। আরো জানা যায়, ওই সরকারি জমি থেকে মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে জালাল মিয়া একটি মেহগনি গাছ কেটে নেয়। এবং বর্তমানে ওই জমিটি মাটি দিয়ে ভরাট করার পায়তারাও করছে।
এ ব্যাপেরে আব্দুর রহিম তাঁর নামে সাইনবোর্ড টানানোর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সরকারের প্রয়োজন হলে আমি জমি ছেড়ে দিব। কিন্তু অন্য কাউকে ভোগ দখল করতে দিবো না। অন্যদিকে অভিযুক্ত হোসেন মিয়া, সবুর মিয়া ও জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জমিটি সরকারি বলে স্বীকার করেন। তবে তারা জানান এ জমিটি যেন পাশের বাড়ির জালাল মিয়া পায় সে ব্যাপারে তাঁরা চেষ্টা করছে।
মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল জানান, বিষয়টি উনি খোজ নিয়ে দেখবে। যদি জায়গাটি সরকারী হয়, তাহলে দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।