সুধীর বরণ মাঝি, শিক্ষক, হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয় (চাঁদপুর):
প্রিয় পাঠক আমরা এখন এক বিশেষ সময় পাড় করছি। যার সাথে আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য,এবং সংস্কৃতি এবং জীবন-জীবিকার একটি অংশ জড়িত। আমার এই লেখার সফলতা আসবে যদি এর মাধ্যমে একজন মানুষকেও সচেতন করা যায়। রূপালি ঝিলিক। জাদুকরী স্বাদ। নাম তার ইলিশ।
সোনলী আভায় ছড়ানো ইলশ। রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক উপটৌকনে এ মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ইলিশ আমাদের ভৌগলিক নির্দেশক। ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ এবং জাতীয় সম্পদ। এর মাধ্যমে অর্জিত হয় বৈদেশিক মুদ্রা। তাই স্বাভাবিক ভাবেই আমরা বলতে পারি ইলিশের অর্থনৈতিক গুরুত্বও অনেক এবং ইলিশ একটি অতি উপাদেয় ও পুষ্টিকর খাদ্য। ইলিশ পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই দায়। তাই ইলিশ রক্ষার দায়িত্ব আমার আপনার এবং সবার।
আমাদের সফলতার আরেকটি প্রতিকের নাম ইলিশ। ইলিশ এখন দেশের গন্ডির বাইরে গিয়েও পররাষ্ট্র নীতিতেও ভূমিকা রাখছে। একটি মা ইলিশ প্রায় ২৩লক্ষ ডিম ছাড়ে। প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশকে রক্ষা করতে না পারলে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে আমাদের অর্থনীতির ওপর, আমাদের জীবন যাপনের ওপর ,আমদের মৎস সম্পদের ওপর,আমাদের খাদ্যের ওপর। মৎস্যবিষয়ক আন্তর্জাকি সংস্থা ‘ ওয়ার্ল্ড ফিস ’ ২০২০ এর তথ্য অনুযায়ী বিশে^র মোট ইলিশের ৮৬ভাগ ইলিশ বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। পলিবিধৌত মহিসোপানকে বলা হয় ইলিশের শ্রেষ্ঠ চারণভূমি। ভৌগলিক অর্থনীতিতে শুধু নয় জাতীয় অর্থনীতিতেও একটি সম্ভাবনাময় ইলিশ সম্পদ। পৃথিবীর বিখ্যাত বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদাও বিশ্বব্যাপী। বিশেষ করে চাঁদপুরের ইলিশের স্বাদ ও খ্যাতি বিশ্বজোড়া। তাই চাঁদপুরকে বলা হয় ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর। তাই আমাদের ভৌগলিক টিকিয়ে রাখতে হলে মা ইলিশ রক্ষার কোন বিকল্প নাই। চলছে মা ইলিশ রক্ষার অভিযান।
ইলিশ প্রজনন মৌসুম ৪ অক্টোবর থেকে ২৫অক্টোবর পর্যন্ত ২২দিনের মা ইলিশ রক্ষার অভিযান শুরু হয়েছে। আমরা মা ইলিশ রক্ষার এই অভিযানের সফলতা কামনা করি। ৪ অক্টোবর থেকে ২৫অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি ও মজুত নিষিদ্ধি করেছে সরকার। রাষ্ট্রের এবং রাষ্ট্রের জনগণের উন্নয়নের স্বার্থে মা ইলিশ রক্ষা করার অভিযানকে সফল করতে হবে যে কোন মূল্যে। মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা থাকলেও কিছু অসাধু ব্যক্তির অতিমাত্রার লোভের কারণে গত কয়েক বছর যাবৎ এই পরিকল্পনা ব্যাস্থে যাচ্ছে। ৪ অক্টোবর থেকে ২৫অক্টোবর পর্যন্ত ২২দিনের মা ইলিশ রক্ষার অভিযান থাকলেও থেমে নেই জেলেদের মাছ ধরা। জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিধন করে চলছে মা। প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে মেঘনা, পদ্মা এবং তেতুলিয়া চলে যায় গংদের দখলে। প্রজনন সময়ের মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরার খবর আসে প্রতিদিনই কোন কোন দৈনিকে ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াতে।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেরা মেতে উঠেছে ইলিশ নিধনে। এই জেলেরা কি রাষ্ট্র কিংবা প্রশাসনের চেয়ে অধিক ক্ষমতাধর নাকি প্রশাসনের দুর্বলাতায় জেলেরা এই হীন কাজে মেতে উঠে ? যদি তাই হয় তবে কঠোরতা,জবাবদিহিতা এবং সচেতনতার বিকল্প নেই। মাছে ভাতে বাঙালি, মা ইলিশের করি। ইলিশ মাছ খেতে মজা। ইলিশের নাম শুনলেই মুখে জল এসে যায়। পৃথিবীর সুস্বাদু মাছের মধ্যে ইলিশ অন্যতম একটি। পৃথিবীর মোট উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি ইলিশ আমাদের দেশে উৎপাদন হয়। ইলিশ বাস করে সমুদ্রে এবং নদীতে। কিন্তু ডিম পাড়ে নদীতে এবং ডিম পাড়ার জন্য ঝাঁকে ঝাঁকে সমুদ্র থেকে নদীতে চলে আসে। অর্থাৎ মিঠা পানিতে এবং মিঠা পানিতেই বাচ্চা ফুটে। নদী এবং নদীর মোহনা হলো ইলিশের প্রাকৃতিক হ্যাচারী। পদ্মা মেঘনা,যমুনাকে বলা হয় ইলিশের আতুর ঘর। আমাদের নদীগুলো ইলিশের ডিম ছাড়ার জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত। আমাদের নদী গুলো মা ইলিশের বাপের বাড়ি। সন্তান প্রসবের জন্য বাপের বাড়ি যেমন একজন মায়ের জন্য নিরাপদ ঠিক তেমনি ডিম ছড়ার জন্য এবং বাচ্চা ফুটানোর জন্য নিরাপদ আমাদের নদীগুলো। তাই ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি কারর জন্য নিষেধাঙ্গা চলাকালীন ৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিন মা ইলিশ এবং ডিমওয়লা ইলিশ ধরা যাবে না।
পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই একটা নির্দিষ্ট সময়ে সমুদ্রে এবং নদী মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। ইলিশ মাছ দেশের মোট উৎপাদনের শতকরা ১২ভাগ দখল করে আছে। জাতীয় রপ্তানি খাতে এই খাতের আয় শতকরা চার ভাগ। কিন্তু নির্বিচারে মা ইলিশ এবং জাটকা আহরণ ও নিধনের ফলে এর উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। সে কারণে মৎস্য সংরক্ষণআইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ,ইরিশের অভয়াশ্রম নির্ধারণ ও তা কার্যকর করণ প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখা ও জাটকা নিধন বন্ধকরণ কর্মসূচিকে জোরদার করতে হবে। আমাদের খাদ্য তালিকায় প্রাণিজ আমিষের শতকরা ৫৮ভাগ আসে মাছ থেকে। প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি দূর করতে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। আমাদের অর্থনৈতিকক উন্নয়নে, কর্মস্ধসঢ়;স্থানে, দারিদ্র মোচনে এবং প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি দূরীকরণে মৎস্যখাতের উন্নয়ন নিতান্ত অপরিহার্য।
বিগত বছরগুলোতে দেখেছি মা ইলিশ রক্ষার অভিযান চলাকালীন সময়ে জেলেদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হলেও কিছু অসাধু এবং অতি লোভী জেলেরা বিশেষ করে ভোলা, বরিশাল, পুটুয়াখালী,বরগুণা, পিরোজপুর, শরিয়তপুর, মাদারিপুর, লক্ষ্মীপুর, মুন্সিগঞ্জ, মাওয়া, গজারিয়া, চাঁদপুরের মতলব,রাজরাজেশ্বর, হাইমচর, কাটাখালী, চরভৈরবী, ঈশানবালাসহ আরো কিছু কিছু এলাকায় দিনের আলোতে এবং রাতের আধাঁরে অনেকটা প্রশাসনের নাকের ডগায় অবাধে নিধন করা হয় মা ইলিশ এবং ডিমওয়ালা ইলিশ। বর্তমান সময়েও এইদৃশ্য চোখে পড়ছে। এই ভাবে ইলিশ নিধন করতে থাকলে আমাদের জাতীয় মাছ ইলিশের অস্তিত্বের সংকটের মুখে পড়বে এবং ইলিশ হয়ে পড়বে দুঃস্প্রাপ্য। ইলিশের যেমন আছে পুষ্টিগুণ তেমনি আছে অর্থনৈতিক গুরুত্ব। ইলিশেল মাধ্যমে জীবীকা নির্বাহ করে দেশের এক শতাংশ মানুষ এবং জাতীয় অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ইলিশকে বলা হয় আমাদের দেশের সিলভার গোল্ড। ইলিশ রক্ষা করতে না পারলে আমাদের পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও বেড়ে যাবে। অর্থনীতিেিতও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। “ রক্ষা করলে মা ইলিশ,ঘুচবে অভাব আসবে সুখ, তাতেই ভাত তাতেই কাপড়।’ মা ইলিশ রক্ষা করতে পারলে সাধারণ জনগণের এবং রাষ্ট্রের যা না লাভ তার অনেক অনেক গুণ বেশি লাভ আমাদের দেশের জেলেদের। মা ইলিশ রক্ষার পাশাপাশি ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে নদীতে জেগে ওঠা ডুবো চর ও ভাসমান চরগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে খনন করতে হবে। আর এতে শুধু ইলিশ উৎপাদনই বৃদ্ধি পাবে না রোধ হবে নদী ভাঙ্গনও। ইলিশ অনেক দ্রুতগতি সম্পন্ন মাছ্ধসঢ়;। এরা সমুদ্র এবং নদীতে দল বেধে চলে। এরা যেই গতিতে সামনে যায় এবং চলার পথে বাধা পেলে তার চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে পিছনের দিকে ছুটে চলে। তাই ডুবো চর এবং ভাসমান চরের কারণে নদীতে ইলিশের উৎপাদন কমে যাচ্ছে পক্ষান্তরে মায়ানমারে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদী দূষণ এবং নদী দখল ইলিশসহ মিঠা পানির অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিও ক্ষেত্রে বড় বাধা। ইলিশসহ মিঠা পানির অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মাননীয় কর্তৃপক্ষকে নদী দূষণ রোধ এবং নদীকে দখলমুক্ত রাখতে হবে। কিছু দিনের নৌকাবিহীন নদৗ যা হবে আগামী দিনের মাছেপূর্ণ নদী। মা ইলিশ এবং ডিমওয়ালা ইলিশ রক্ষার মধ্য দিয়ে আমাদের ইলিশের উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে এবং এতে জেলেদের মাঝে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিলে আসবে ।
মা ইলিশ রক্ষার অভিযানকে সফল করতে হলে প্রশাসনের নজরদারী বৃদ্ধি করতে হবে, মা ইলশ রক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপের কঠোর হস্তে সফল বাস্তবায়ন করতে হবে।অভিযানে কেউ যেন কোন প্রকার সুযোগ গ্রহণ করতে না পারে সেইদিকে প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদেরকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রশাসনের পাশাপাশি আামাদের সেনাবাহিনীকেও ইলিশ রক্ষার অভিযানকে সফল করার জন্য কাজে নিয়োজিত করা যেতে পারে। মা ইলিশ রক্ষার অভিযানকে সফল করার জন্য আমাদের প্রিন্ট মিডিয়া এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াকে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে। মা ইলিশ রক্ষার উপকারীতা মিডিয়ার মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে তুলে ধরতে হবে। এই অভিযানকে সফল করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি সচেতন নাগরিককেও এগিয়ে আসতে হবে। লোক দেখানো অভিযান নয় চাই মা ইলিশ রক্ষার সফল অভিযান। এর জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছু করতে হবে বিনা বাধায় বিনা সংকোচে। প্রশাসনের যথাযথ দায়িত্ব পালন এবং জনসচেতনতাই পারে মা ইলিশ রক্ষার অভিযানকে সফল করে তুলতে। নিষিদ্ধ সময়ে যারা জেলেদেরকে মা ইলিশ ধরার কাজে উৎসাহিত করে তারা দেশ ও জাতির জাতীয় শত্রু। তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে এসে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে প্রশাসনের কোন রকম অবহেলা পরিলক্ষিত হলে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
নিষিদ্ধ সময়ে কোন জেলে মাছ ধরলে তার জেলে কার্ড বাতিলসহ নূণ্যতম ১০বছরের জামিন অযোগ্য সশ্রম কারাদন্ড দিতে হবে। টকশো, বিজ্ঞাপন চিত্রের মাধ্যমে এবং সামাজিক সচেতনার মাধ্যমে মানুষের নেতিবাচক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারলে মা ইলিশ রক্ষা করা সম্ভব হবে। আইনের সঠিক প্রয়োগ যেমন থাকতে হবে তেমনি থাকতে হবে সচতেনতা মূলক কার্যক্রম। এই দুই সমান গতিতে চললেই রক্ষা পাবে পৃথিবী বিখ্যাত চাঁদপুরের ইলিশ এবং বাড়বে রপ্তানি আয়। ম্ধাসঢ়; ইলিশ রক্ষা করতে হলে প্রতিটি মোহনায় নৌ-বাহিনী র্যাব ও বিজিপি টহল নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবী বলে আমরা মনে করি। যে কোন মূল্যে মা ইলিশ এবং ডিমওয়ালা ইলিশ রক্ষার অভিযনকে সফল করে তুলতে হবে। অপরাধিরা সংখ্যায় কম হয়েও আমাদের উপর কর্তৃত্ব করে যাচ্ছে যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। আমরা আশা করি মা ইলিশ ও ডিমওয়ালা ইলিশ রক্ষার অভিযান সফল
হবে। তা যতই কঠোর ও কঠিনই হউক। অভিযান ব্যর্থ হলে তা আমাদের পরাজয়। আমরা আমাদের পরাজয় চাই না। যেভাবেই বলি ডিম ছাড়ার মৌসুমে মা ইলিশ ও ডিমওয়লা ইলিশ রক্ষার বিকল্প নেই। আমরা দেখতে চাই না নিষেধাঙ্গা অমান্য করা অসাধু এবং লোভী জেলেদের মা ইলিশ এবং ডিমওয়ালা ইলিশ নিধনের মহোৎসবের কোন চিত্র। আমরা বিশ্বাস করি আইন অমান্যকারীরা রাষ্ট্রের চেয়ে বেশি শক্তিশালী নয় এবং তারা সংখ্যায়ও হাতে গোনা। হাতে গোনা জেলেদের জন্য সমস্ত দেশের ক্ষতি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে মা ইলিশ রক্ষার গুরুতএকটি ডিমওয়লা মা ইলিশকে নিধন করা মানে হচ্ছে আগামী দিনে তেইশ লক্ষ ইলিশকে হত্যা করা। তাদের বুঝাতে হবে এক ইলিশে তেইশ লক্ষ ডিম,মা ইলিশের যতœ নিন। ম্ধাসঢ়; ইলিশের যতœ করি, ইলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করি। তাই অভিযানের মাধ্যমে একটি ডিমওয়লা মা ইলিশকে রক্ষা করতে পারলে আগামী দিনের জন্য তেইশ লক্ষ ইলিশকে রক্ষা করা যাবে।ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন। এ ক্ষেত্রে মা জেলেদেরকে বুঝাতে হবে এই ইলিশের মালিক জেলেরাই এবং এরা হচ্ছে তাদের সন্তানের মতো। এই মা ইলিশ(সন্তান)কে রক্ষা করতে পারলে এরাই জেলেদের আগামী দিনের অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালন করবে। সন্তানেরক্ষতি হলে যেমন পরিবারে অর্থনৈতিকসহ অন্যান্য বিপর্যয় নেমে আসে ঠিক তেমনি এই মা ইলিশকে রক্ষা করতে না পারলে জেলেদের জীবনেও বিপর্যয় অনিবার্য।
আর ইলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে চক্রবৃদ্ধি হারে। আমার বাড়ি চাঁদপুরের মেঘনার পাড়ে।যেখানে ইলিশের বাড়ি বলে খ্যাত। মৌসুম ছাড়াও এখানে সবসময়ই সুস্বাদু ইলিশ পাওয়া যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য এবার ভরা মৌসুমেও চাঁদপুর,হাইমচরের মেঘনা ছিল অকেটাই ইলিশ শূন্য। এই মৌসুমে আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে ইলিশের স্বাদ গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হয়েছে ইলিশের আকার এবং এর আকাশ চুম্বী দামের কারণে। এর প্রধান কারণ দুটি। এক জাকটা রক্ষার অভিযানের ব্যর্থতা এবং দুই মেঘনাতে প্রচুর ডুবোচর। এই ডুবোচরের কারণে জালের প্রবাহ কম থাকায় ইলিশের বিচরণও কম। সামাজিক আন্দোলন, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও অবস্থান, আইনের সঠিক প্রয়োগ, ডুবোচর খনন এবং সচেতনতার মাধ্যমে মা ইলিশ ও ডিমওয়ালা ইলিশ রক্ষার অভিযান সফল এবং ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।