ডেস্ক রিপোর্টঃ
কুমিল্লার বরুড়ায় যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় হয়েছে মামলা। পুলিশ শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ফারুককে গ্রেফতার করেছে। তিনি বরুড়া পৌরসভা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
নিহত জহিরুলের ভাই জোবায়ের হোসেন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাতে বরুড়া থানায় চার জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) ময়নাতদন্ত শেষে জহিরের মরদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলে বিকালে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘাতকদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে। এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি নিহতের মা ও স্বজনসহ এলাকাবাসীকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের বিষয়ে আশ্বাস দেন। এদিকে জহির হত্যার কারণ নিয়ে এলাকার কেউ কেউ ‘রাজনৈতিক বিরোধের’ কথা বললেও স্থানীয়ভাবে অনুসন্ধানে এর সত্যতা মেলেনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বরুড়া উপজেলার জীবনপুর গ্রামের আবাদুল ইসলাম আবাদের সঙ্গে তার শ্যালক একই গ্রামের শিব্বির আহমেদের সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার মারামারি ও সালিশ বৈঠক হলেও সুরাহা হয়নি। স্থানীয়দের অনুরোধে ওই বিরোধ মেটাতে বৃহস্পতিবার দুপুরে যুবলীগ নেতা জহির সেখানে যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে তিনি স্থানীয় একটি মার্কেটের দোকানে গিয়ে বসেন। এ সময় আবাদ, তার ছেলে মাসুদসহ তাদের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জহিরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এসময় জহিরের সঙ্গী রানা ও সাদ্দাম হোসেনকেও জখম করা হয়। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জহিরকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। নিহতের ছোট ভাই জোবায়ের হোসেন বাদী হয়ে আবাদ, মাসুদ ও ফারুকসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বরুড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার কুমেক হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত জহিরুল ইসলাম জহিরের মরদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে স্থানীয় এলাকায় দুটি জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজায় অংশ নেওয়া শোকার্ত ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী খুনিদের ফাঁসির দাবি জানান। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বাহার বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ফারুককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।