ডেস্ক রিপোর্টঃ
যুবকদের চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে উদ্যোক্তা হতে যুবকদের সহযোগিতা ও উৎসাহিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বেজা-এর গভর্নিং বডির ৭তম সভার সূচনা বক্তব্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন প্রান্ত থেকে সংযুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যুব সমাজকে যেন আকৃষ্ট করতে পারি, তাদের যেন উৎসাহিত করতে পারি। শুধু চাকরির পেছনে ছোটা না, নিজেরা কিছু করে দেখানো, কাজ করা। সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিয়ে কাজ করতে হবে।
দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে ও কর্মসংস্থান বাড়াতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা। এখন অনেক বিনিয়োগ- এটা সব সময় এদেশ থেকে ওদেশে ঘুরতে থাকে। আমরা যত বেশি আনতে পারি আমাদের জন্য ভালো। কাজেই বিদেশি বিনিয়োগ যেমন আসবে, দেশেও আমাদের যাদের বিনিয়োগ করার সক্ষমতা আছে তারাও যেন বিনিয়োগ করতে পারে। আমাদের যারা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর তাদেরও আমরা যেন উৎসাহিত করতে পারি।
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্পায়নের ক্ষেত্রে আমাদের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হবে। এই কথা মাথায় রেখে যে আমাদের শিল্পায়ন করতে হলে জায়গা সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে। কারণ একটা কাজ করতে গেলে আমাদের সমস্যা হয়ে যায় ভূমি নিয়ে।
‘এই সমস্যাটা যাতে না থাকে সেটা মাথায় রেখে আবার পাশাপাশি ফসলি জমি, কৃষিজমি সেটাও রক্ষা করতে হবে। বনভূমি রক্ষা করতে হবে। এসব কিছু চিন্তা-ভাবনা করে আমরা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেই। ’
কৃষির সঙ্গে শিল্পায়নের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে শিল্পায়নও আমাদের প্রয়োজন। শিল্পায়ন বা শিল্পের বিকাশ ছাড়া কোনো দেশ অগ্রগতি অর্জন করতে পারে না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাচ্ছি আমাদের দেশে শিল্পায়ন হোক। কারণ শিল্পায়ন ছাড়া আমরা যেমন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবো না। আবার পাশাপাশি আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো, চাহিদা পূরণ করা, সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানি বাড়ানো- এসব কথা মাথায় রেখে আমাদের শিল্পায়নের প্রচেষ্টা করতে হবে।
শিল্পায়ন বিকাশের সঙ্গে কৃষিজমি ও পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্পায়নের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমাদের দেশ ভূখণ্ডের দিক থেকে অত্যন্ত ছোট হলেও জনসংখ্যা অনেক বড় এবং জনসংখ্যা বাড়ছে। এই জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের কৃষিজমি রক্ষা করতে হবে।
‘আবার প্রকৃতির সঙ্গে আমরা যেন চলতে পারি- কারণ বাংলাদেশ একটা ডেল্টা। এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। কাজেই আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করাও একান্তভাবে অপরিহার্য। সেদিকেও আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। ’
করোনা মহামারির প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে সরকার বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা আমাদের অনেক ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। কিন্তু আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতির ক্ষেত্রটা যেন সম্প্রসারিত হতেই থাকে এবং অগ্রগতি পেতেই থাকে সেটা আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।