সুকৃতি ভট্টাচার্য্য
বাবার বাড়ি ছেড়ে ২০ বছর বয়সে বউ হয়ে এসেছি,
বিয়ের পরের দিন শ্বাশুড়ি যখন বাসী পরোটা গরম করে খেতে বললো তখন খুব দুঃখ হলো।
বাসী পরোটা কেন? আমি বাসী পরোটা খায় না,মুখের উপর বলতে পারলাম না।
কয়েক দিন যেতেই অভ্যাস হয়ে গেল,
দুপুরে রান্নার চাউল শ্বাশুড়ি মেপে দিতো,
সবাই খাওয়ার পরে অনেক সময় ভাত থাকতো না আবার রান্না করে খেতে হবে তাই চুপ করে থাকতাম, পানি খেয়ে দুপুর কাটিয়ে দিতাম।
খাওয়ার সময় কাঁটার সাথে যে মাছটা তাই আমার জন্য থাকতো। তাতেও কোন সমস্যা নাই,২০ বছর বাবার বাড়ি অনেক মাছ খেয়েছি।
দিন গড়িয়ে যেতে লাগলো
একদিন কোল জুড়ে এলো বাচ্চা তার মুখ দেখে সব ভুলে গেলাম,
আর একটু বড় হতেই আমার আঁচল ধরে হাঁটা, আধো আধো বুলিতে কথা বলা,ভাত চটকে মেখে খাওয়ানো,যখন নিজে খেতে শিখলো তখনও মেখে দিতে হতো,বড় মাছের টুকরো টা বর, ছেলের জন্য রেখে দিতাম ওদের তৃপ্তি করে খাওয়াতে পারলে খুব শান্তি পেতাম,সব চাওয়া পাওয়া যেন তাদের ঘিরে।
আস্তে আস্তে ছেলে বড় হলো বিয়ে দিলাম বউ রান্না করবে, ছেলে আমার সাথে আগের মতো গল্প করবে,আঁচল ধরে টানবে কথা বলার জন্য কতোনা হাসি খুশিতে সংসার চলবে।
কিছু দিন যেতেই বুঝলাম সব বিপরীত।
ছেলে আমার কাছে আসে না গল্প করে না আমাকে দেওয়ার মতো তার কোন সময় নেই।
আস্তে আস্তে সব হারালাম চাবি,অধিকার, বাড়ির দলিল কিছুই আমার রইল না।
সত্যি কথা বলতে কি মেয়েদের কোন বাড়িই নেই!!
আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে আছে বৃদ্ধাশ্রম??