মহান বিজয় দিবস উদ্ধসঢ়;যাপনের ব্যয় নির্বাহের জন্য কুমিল্লার মুরাদনগরে ইউএনও’র পক্ষ থেকে উপজেলার ৪৬টি ইটভাটাসহ সকল ব্যবসায়ী সমিতির কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছাড় দেওয়া হয়নি উপজেলার বড় বড় বাজারে থাকা ফুটপাতের দোকানিদের চাঁদা দিতে হয়েছে ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত উপজেলার ৪৬টি ইটভাটা থেকে কাগজপত্রের সঠিকতার উপর যাচাই বাছাই করে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা সহ সকল ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন সমিতির তালিকা করে গণহারে চাঁদা তোলা হয়। মুরাদনগর উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আফজালের রহমান ঘুরে ঘুরে এই চাঁদা উত্তোলন করেন।
এ বিষয়ে মুরাদনগর পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আফজালের রহমান বলেন, ‘আমি ইউএনও স্যারের শুভেচ্ছা জানাতে ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়েছি। আর টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকারও করছিনা আবার অস্বীকারও করছি না। এ উদ্ধসঢ়;যাপন উপলক্ষে কত টাকা তোলা হয় বা ব্যয় করা হয় তা সব জানেন ইউএনও স্যার ও অফিস। আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।’
বিজয় দিবস উদ্ধসঢ়;যাপন উপলক্ষে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলাউদ্দিন ভূঞা জনী মুঠোফোনে বলেন, সকল জাতীয় অনুষ্ঠান উদ্ধসঢ়;যাপনের ক্ষেত্রে কেউ সহযোগিতা করবে এটা নতুন কিছুনা। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও উপজেলার সকল ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে সহযোগিতা করেছে।
খুশি হয়ে কি কেউ ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কোথাও কাউকে বাধ্য করে টাকা নেইনি। কে কি বলেছে সেটা আমার জানা নেই। আর এ ধরনের টাকা কারো ঘরে নেওয়ার সুযোগ নেই।
আমরা কেউ ঘরে নিচ্ছি না বা ব্যাক্তিগত কারো কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না। আয়- ব্যয়ের বিষয়ে মোটামোটি উদ্ধসঢ়;যাপন কমিটির সকল সদস্যই অবগত আছে। এই কমিটিতে সংবাদকর্মী আগে ছিলোনা বিধায় এবছরেও রাখা হয়নি।
তবে দিবস উদ্ধসঢ়;যাপনের আপ্যায়ন ও পুরস্কার ক্রয় উপ-কমিটির আহবায়ক মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো: নাজমূল হুদা আয়-ব্যয়ের হিসেব জানার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমাদের কাজ হচ্ছে অনুষ্ঠান সফল করতে যে দায়িত্ব দেয়া হয় তা পালন করা। আয়-ব্যয়ের হিসেব থাকে ইউএনও স্যারের কাছে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
উপ-কমিটিতে থাকা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফওজিয়া আকতার, উপজেলা মৎস কর্মকর্তা ফয়জুর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর কবির ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমানসহ সকলেই এক সুরে তাল মিলিয়ে বলেন, সকল জাতিয় অনুষ্ঠানে আমাদেরকে উপ-কমিটিতে রাখা হয়। তবে দায়িত্ব পালন করি ঠিকই আয়-ব্যয়ের কোন কিছুই আমাদের জানা নেই। যা কিছু হয় সব জানেন ইউএনও স্যার।
মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ তমাল বলেন, জাতীয় অনুষ্ঠান গুলো উদ্ধসঢ়;যাপনের পর যে ব্যয়টা হয় সেগুলো আমাদেরকে দেখানো হয়। আসলে কোন জায়গা থেকে কত আদায় হয়েছে তা সব জানেন ইউএনও।
মুরাদনগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম আরিফ বলেন, আগে সকল জাতীয় অনুষ্ঠান উদ্ধসঢ়;যাপনের ক্ষেত্রে সংবাদকর্মীদের ডাকা হতো। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসার পর থেকে কোন সংবাদকর্মীকে ডাকছেন না।
বিজয় দিবস উদ্ধসঢ়;যাপন করতে গিয়ে কতটাকা আদায় হয়েছে বা ব্যয় হয়েছে তা জানার অধিকার থাকলেও কোন সদস্যকে জানানো হচ্ছে না। হয়তো ইউএনও’র কোন দূর্বলতা রয়েছে অন্যথায় আয়-ব্যয়ের হিসেব কেন তিনি কাউকে জানাচ্ছেন না। আমার মনে হয় এ বিষয়টির উপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একটু নজর দিলে সকল প্রকার জাতিয় অনুষ্ঠান উদ্ধসঢ়;যাপনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ফিরে আসতো।