নিজস্ব প্রতিনিধি, মুরাদনগর:
খন্দকার মমতাজ বেগম জাতিয় সংসদ নির্বাচনে ছিলেন বিএনপি’র এজেন্ট অথচ তাঁকে করা হয়েছে মুরাদনগর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি। এতে উপজেলা আওয়ামীলীগ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা—কর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত দিনগুলোতে খন্দকার মমতাজ বেগম বিএনপি’র সকল প্রকার সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ গ্রহনের পাশাপাশি ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে নবীপুর পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের বিয়াম ল্যাবরেটারি স্কুলের সেন্টারে বিএনপি’র প্রার্থী মজিবুল হকের হয়ে এজেন্ট ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি যুব মহিলা লীগের সভাপতি হওয়ার লক্ষ্যে একই উপজেলায় বাড়ি হওয়ার সুবাদে কুমিল্লা উত্তর জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহবায়ক সাহিদা আক্তার সাকির সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন মমতাজ বেগম। ওই নেত্রীর সঙ্গে সখ্যের কারণেই বিএনপি থেকে এসেও যুব মহিলা লীগের বড় পদ পেয়েছেন বলে উপজেলা জুড়ে আলোচনা—সমালোচনা চলছে।
কমিটি ঘোষণাকারী কুমিল্লা উত্তর জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি তাছলিমা চৌধুরী সিমিন বলেন, কমিটি দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের উপজেলা ভাগ করে দেয়া আছে। এটা আমার কমিটির যুগ্ম আহবায়ক সাহিদা আক্তার সাকির এলাকা। সে যদি যাচাই বাছাই না করে বিএনপি’র কাউকে পদ দিয়ে থাকে তাহলে এটি ঠিক হয়নি। আমি খবর নিয়ে দেখছি অভিযোগের সত্যতা পেলে। অবশ্যই আমি আমার কেন্দ্রীয় নেত্রীদের জানাবো।
তবে সাধারণ সম্পাদক সাহিদা আক্তার সাকি বলছেন, খন্দকার মমতাজ বেগম উপজেলা যুব মহিলা লীগের সকল কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন। যথেষ্ট যাচাই বাছাই শেষে এ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কিছু লোকের স্বার্থ হাসিল হয়নি বলে তারা এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল খায়ের বলেন, খন্দকার মমতাজ বেগম আমার নিজ এলাকার। সে এলাকায় প্রকাশ্যে বিএনপি’র রাজনীতি করেছে। এমন কি সংসদ নির্বাচনে বিএনপি’র হয়ে এজেন্ট ছিলো সে। কিন্তু কোন প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়া মমতাজ বেগম কে যুব মহিলা লীগের মতো ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের সভাপতি করার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খন্দকার মমতাজ বেগম দাবি করেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই আওয়ামীলীগ করি। বিএনপি’র কোনো কমিটিতে আমার কোনো পদ নেই বা কোন কার্যক্রমে আমি সম্পৃক্ত নই। তিনি আরো বলেন, আমার এই পদ পাওয়ার জন্য অনেকেই প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলো। তারা এখন পদ না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা গুজব রটাচ্ছে। কোন কোন সিনিয়ন নেতার আবার স্বার্থে মেলেনি তাই তারা আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে।
প্রেক্ষাপট: গত ১০ অক্টোবর খন্দকার মমতাজ বেগম কে সভাপতি ও নাদিরা বেগম কে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট মুরাদনগর উপজেলা যুব মহিলা লীগের কমিটি ঘোষনা করেন কুমিল্লা উত্তর জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি তাছলিমা চৌধুরী সিমিন ও সাধারণ সম্পাদক সাহিদা আক্তার সাকি।