ডেস্ক রিপোর্টঃ
বশিষ্ট শিল্পপতি পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাসেম মারা গেছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত সোয়া একটায় তিনি রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে মারা যান।
এম এ হাসেমের ছেলে শওকত আজিজ রাসেল ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার বাবার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। ১৯৪২ সালে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে জন্ম এম এ হাশেমের।
এম এ হাসেম করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। করোনা পজিটিভ হওয়ার পর ১১ই ডিসেম্বর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর গত ১৬ই ডিসেম্বর অক্সিজেন স্যাচুরেশন ১০০-এর নিচে নেমে গেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।
অনেকটা শুন্য থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ি- শিল্প উদ্যোক্তা- সাবেক সংসদ সদস্য পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেম। বাংলাদেশের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি অন্যতম। প্রথম বেসরকারি ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রাও শুরু তার হাত ধরেই। ২০০১ সালে বিএনপির হয়ে নোয়াখালী- ২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
অভাব অনটনে তরুণ বয়সেই পাড়ি জমান ঢাকায়। করতে হয়েছে ছোটখাট অনেক কাজ। ১৯৬০ সালে হাশেম টোবাকো নামে প্রতিষ্ঠান দিয়ে যাত্রা শুরু তার ব্যবসায়ি জীবনের। তামাকের ব্যবসা থেকে জায়গা জমির ব্যবসায় দ্রুতই সাফল্য পান হাশেম। ১৯৬২ সালে নিজের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নাম রাখেন পারটেক্স। শুরু করেন ফুডের ব্যবসা।
১৯৮৩ সালে তাঁর নেতৃত্বে গড়ে উঠে দেশের বেসরকারি খাতে সর্বপ্রথম অনুমোদনপ্রাপ্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক-সিটি ব্যাংক। এছাড়া ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম তিনি।
ব্যবসায় ছাড়াও এম এ হাশেম সরব ছিলেন সামাজিক ও শিক্ষামূলক কাজে। দেশের প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ গঠনে রেখেছেন ভূমিকা। নোয়াখালীতে নিজের নামে করেছেন কলেজ।
ব্যবসায় ব্যাপক সফলতার পর কিছুদিনের জন্য আসেন রাজনীতিতেও। ২০০১ সালে বিএনপির মনোনয়নে নিজ জন্মস্থান নোয়খালী-২ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
সংসদে দেশের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিক লোকসানের ব্যাপারে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় ছিলেন তিনি।
এক এগারোর সময় তাকে করতে হয় কারাবরণ। ঘোষণা দেন আর রাজনীতি না করার। ২০১৬ সালে বিএনপি থেকে আনুষ্ঠানিক পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে সরে দাঁড়ান রাজনীতি থেকে।
জীবনের শেষ কয়েক বছর নিজের গড়া ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন দেশের অন্যতম এই শিল্প উদ্যেক্ত্যা।