- নিজস্ব প্রতিবেদক, মুরাদনগর:
বাবুটিপাড়ায় দক্ষিণ মুরাদনগর কল্যাণ সমিতি, ঢাকার উদ্যোগে অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা বিনামূল্যে দিনব্যাপী চক্ষু শিবির কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত কুমিল্লার মুরাদনগরের বাবুটিপাড়া গ্রামে বিনামূল্যে ৪৮০ জনকে চোখের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। এছাড়া ৮০ জনকে বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য চক্ষু হাসপাতাল, কুমিল্লায় নেয়া হয়।
বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠান চক্ষু হাসপাতাল, কুমিল্লার তত্ত্বাবধানে ও দক্ষিণ মুরাদনগর কল্যাণ সমিতি, ঢাকার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত চক্ষু শিবিরে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রেজাউল করিম।
এ সময় সভাপতি বলেন, “এরকম চক্ষু শিবির আমরা সবসময় করে থাকি। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ইউনিয়নে এটি করা হবে। যারা অবহেলিত এবং অর্থাভাবে চক্ষু সেবা নিতে পারেনা তাদের জন্য আমরা এই চক্ষু শিবির আয়োজন করেছি।” তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ মুরাদনগর কল্যাণ সমিতি স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শিক্ষাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। সামনে আমরা বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে গাছের চারা বিতরণ করব। এভাবে আমরা মানুষের পাশে সবসময় আছি, সবসময় থাকব ইনশাআল্লাহ।”
চক্ষু শিবিরে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল হান্নান জানান, “আমরা শতভাগ ফ্রি চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করি। আজকে তারা (চক্ষু হাসপাতাল, কুমিল্লা) তাদের বাস দিয়ে ৮০ জনকে চোখের অপারেশনের জন্য নিয়ে যাবে। এরপর অপারেশন শেষে আবার দিয়ে যাবে। মূলত অসহায় মানুষদের বিনামূল্যে চক্ষুসেবা দেয়াটাই আমাদের লক্ষ্য।”
চক্ষু শিবিরের বিষয়ে জানতে চাইলে চক্ষুসেবা নিতে আসা বাশকাইট গ্রামের রানু বেগম আক্ষেপ করে বলেন, এটা আমাদের গরিবদের জন্য ভালো হয়েছে। বড়লোকেরা তো চলে যায় প্রাইভেটে (বেসরকারি হাসপাতালে), আমরা তো বাবা পয়সার জন্য যেতে পারিনা। একবার গিয়েছিলাম চোখের ডাক্তারের কাছে। বলেছিল ৩ হাজার টাকা লাগবে। জোগার করতে পারি নাই,যাইতেও পারি নাই। আর চিকিৎসা করাতে পারি নাই।”
সেবা নিতে আসা বাবুটিপাড়া গ্রামের মোসলে উদ্দীন মুন্সী বলেন, আমি চোখে ঝাপসা দেখি। এখন আমাদেরকে কাগজপত্র দিয়েছে,ওনারা গাড়ি এনেছে , এখন কুমিল্লা (চক্ষু হাসপাতাল) নিয়ে যাবে। কোনো টাকা লাগবেনা।”
চক্ষু শিবিরের তত্ত্বাবধানে থাকা কুমিল্লা আলেখারচর চক্ষু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার রায়হান মাহমুদ আশিকের সাথে কথা বলে জানা যায় চোখের ছানি রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক। তিনি জানান, চোখ উঠার সমস্যা, এ্যালার্জিজনিত সমস্যা, চোখ দিয়ে পানি পড়ার সমস্যা নিয়েও কেউ কেউ এসেছেন।”
পরিশেষে নিয়মিত সবুজ শাকসবজি ও ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন এ চিকিৎসক।
চক্ষু শিবিরের অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন ইন্জিনিয়ার মোঃ মোতাহার হোসেন (দারোরা)। অনুষ্ঠানে দক্ষিণ মুরাদনগর কল্যাণ সমিতির কার্যকরী পরিষদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোঃ ফজলুর রহমান (বাবুটিপাড়া), ডাঃ এ এফ এম কামাল উদ্দিন সেলিম (রায়তলা), মোহাম্মদ আলী (কাজিয়াতল), মোঃ কায়কোবাদ হোসেন (জাহাপুর), মোঃ শাহজালাল খান সামস (বাঁশকাইট), এম এ কাইউম হোসেন ভূঞা (নোয়াপুস্করিনী), মোঃ ফরিদ উদ্দিন (পাহাড়পুর), এ্যাডভোকেট মোঃ জামাল উদ্দিন (বাবুটিপাড়া)। সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোঃ শহিদুল ইসলাম সরকার, মোঃ মজিবুর রহমান, মোঃ নাছির উদ্দিন ও মিজানুর রহমান।