কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
গত বছর কোরবানির ঈদে সারাদেশের মতো কুমিল্লাতেও সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে অনেক চামড়া ব্যবসায়ী সর্বস্বান্ত হয়েছিলেন। বঞ্চিত হয়েছিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এতিম শিক্ষার্থীরা। দাম না পেয়ে অনেকেই পশুর চামড়া মাটি চাপা দিয়েছিলেন। আবার অনেকেই ফেলে দিয়েছিলেন নদীতে।
তবে এবার কুমিল্লায় ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা। এ বছর পশুর চামড়া কিনতে মৌসুমি ক্রেতারা আসেননি। তাই ক্রেতা না পেয়ে অনেকেই স্থানীয় মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দান করে দেন কোরবানির পশুর চামড়া। বিনামূল্য পাওয়া পশুর চামড়া কিছুক্ষণ সংরক্ষণ করেন জেলার বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। এরপর সেই চামড়া বিক্রি করে দেন গড়ে ৩শ টাকা করে।
গত (১ আগস্ট) কোরবানির ঈদের দিন বিকেলের পর থেকে এমন চিত্রই দেখা গেছে পুরো কুমিল্লা জুড়ে। কুমিল্লা সদরের বাসিন্দা নুরে আলম বাবু এ বছর কোরবানির জন্য ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যর গরু কিনেছিলেন। তার প্রতিবেশী মিন্টু মিয়াও গরু কিনেন ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে। ক্রেতা না পেয়ে গরুর চামড়া দিয়ে দিলেন স্থানীয় মাদ্রাসায়। সেখানে রাতে ছোট বড় সব চামড়াই গড়ে ৩শ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। আর এতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে নুরে আলম বাবু,ও মিন্টু মিয়া জানান, গত বছরের মতো এই বছর অন্তত তাদের পশুর চামড়া গোমতী নদীতে ফেলে দিতে হয়নি। এ বছর ক্রেতা না পেলেও স্থানীয় মাদ্রাসায় দান করছেন তারা। পরে সেখান থেকে পাইকারি ক্রেতারা চামড়া কিনে নিয়ে গেছেন।
জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কালখড়পাড় হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মো. খোরশেদ আলম জানান, পশু কোরবানির পরে ক্রেতা না আসায় অনেকেই মাদ্রাসায় চামড়া দান করেন। কালখড়পাড় হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় ১৫৭টি চামড়া পাওয়া যায়। পরে রাতে চামড়ার পাইকার আসলে প্রতিটি চামড়া গড়ে ৩১০ টাকা করে বিক্রি করে দেন তারা।
এদিকে, জেলার সবচেয়ে বড় চামড়ার বাজার কুমিল্লা নগরীর ঋষিপট্টিতেও একই দামে চামড়া ক্রয় করেছেন ব্যবসায়ীরা। ঋষিপট্টির চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রতন ঋষি জানান, সিন্ডিকেটের কারণে গত বছর চামড়ার দরপতন হয়। ওই বছরর চামড়া কিনে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তবে এ বছর সিন্ডিকেট না থাকলেও চামড়ার বৈদেশিক চাহিদা কম রয়েছে। তাই চামড়ার দর কম।