কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লায় প্রথমবারের মতো মাচায় চাষ হচ্ছে বারোমাসি ফল ব্ল্যাকবেরি তরমুজ। সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা উত্তর ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামের কৃষক কাজী আনোয়ার হোসেন থাইল্যান্ডের এই বারোমাসি তরমুজ চাষ করছেন। ২০ শতক জমিতে মাত্র ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে ৬৫ দিনের ব্যবধানে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করেছেন আনোয়ার।
এখন তিনি আরও জমি নিয়ে ব্ল্যাকবেরি প্রজাতির তরমুজ চাষ সম্প্রসারণ করছেন। এ ক্ষেত্রে উপজেলা কৃষি বিভাগ আনোয়ার হোসেনকে সব ধরনের সহযোগিতা করছে। ফলন ও বিক্রি ভালো হওয়ায় আনোয়ারের মুখে এখন তরমুজের লাল টুকটুকে হাসি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়ক ধরে এগোলেই কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা উত্তর ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রাম। এই গ্রামের সড়কের পাশের ধানি জমির আইল ধরে কয়েক কদম হাঁটলেই চোখে পড়বে ব্ল্যাকবেরি তরমুজ ক্ষেত।
কৃষক আনোয়ার বলেন, ‘ইউটিউবে দেখে আমি ব্ল্যাকবেরি তরমুজ চাষে আগ্রহী হই। এরপর ২০ শতক ধানি জমি তরমুজ চাষের জন্য প্রস্তুত করি। প্রথমে ধানি জমির মধ্যে মাটি উঁচু করে সারি করা হয়েছে। এরপর মাটির মধ্যে পানি যেন আটকে থাকতে না পারে, সে জন্য পলিথিন দেওয়া হয়। এরপর পলিথিন ছিদ্র করে এর মধ্যে থাইল্যান্ডের ব্ল্যাকবেরি তরমুজের বীজ লাগানো হয়। তরমুজের চারা বড় হলে সেগুলো বাঁশ দিয়ে তৈরি মাচায় ছড়ানো হয়। এরপর প্রথমে ফুল আসে। পরে একে একে কালো রঙের তরমুজ বেরিয়ে আসে। দুই মাসের মধ্যে তরমুজ পরিপক্ব হয়। কালো রঙের তরমুজের ভেতরে রক্তাক্ত লাল বর্ণ। স্বাদে মিষ্টি।’
কাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘করোনাকালে তরমুজ বিক্রি করে লাভ হওয়ায় মনে আনন্দ লাগছে। আরও বেশি জমিতে এবার তরমুজ চাষ করব।’
সরেজমিনে গিয়ে কাজী আনোয়ার হোসেনের খেতে দেখা গেছে, সবুজ লতাপাতার মধ্যে মাচায় ঝুলে আছে তরমুজ। আনোয়ার একে একে তরমুজ কাটছেন। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি করছেন ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। আশপাশের ও কুমিল্লা শহরের মানুষ তরমুজ কিনতে তাঁর খেতেই আসেন।
কুমিল্লা নগরের রেসকোর্স এলাকার কাউছার আহমেদ নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘লোক মারফত খবর পেলাম, কাজী আনোয়ার হোসেনের খেতে থাইল্যান্ডের ব্ল্যাকবেরি তরমুজ চাষ হচ্ছে। এরপর তিনটি তরমুজ ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে কিনে এনেছি।’
সদর দক্ষিণ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাহিদা খাতুন বলেন, ‘কুমিল্লা অঞ্চলে কাজী আনোয়ার হোসেন প্রথম ব্ল্যাকবেরি প্রজাতির তরমুজ চাষ করছেন। প্রথমে তিনি ২০ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেন। এখন তিনি আরও জমি নিয়ে তরমুজ চাষ করবেন। সে জন্য জমি প্রস্তুত করেছেন। মাত্র ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে তিনি আড়াই লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। ৬০ থেকে ৬৫ দিনে তাঁর এ লাভ। অন্যরাও এ ধরনের তরমুজ চাষ করতে পারেন। এতে খরচ কম। ফলন ও লাভ বেশি।’