রকিবুল হাসান , কুবি প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) বাংলা বিভাগের উদ্যোগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কুমিল্লা আগমনের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারের শেষ দিনের ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
১৮ জুন (শুক্রবার ) বাংলাদেশ সময় (সকাল ১০.০০ মি.) এবং ভারত সময় (সকাল ৯.৩০ মি.) শেষ দিনের ওয়েবিনার প্রায় তিন ঘন্টাব্যাপী অনলাইন জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহম্মদ রেজাউল ইসলামের সঞ্চালনায় শেষ দিনের ওয়েবিনারে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শামসুজ্জামান মিলকীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. তপোধীর ভট্টাচার্য, এছাড়া আলোচক হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ মাওলা, অধ্যাপক ড. জি এম মনিরুজ্জামান ও ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সায়ক মুখার্জি উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. তপোধীর ভট্টাচার্য বলেন, “কুমিল্লায় ১৯২১ সালে কাজী নজরুল ইসলামের আগমন। তিনি এমন একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন যে তার জীবনী নিয়ে বাংলাদেশের রফিকুল ইসলামও যতেষ্ট আলোচনা করেছেন। কাজী নজরুলের জীবনী নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন গবেষকদের কল্যাণে, বাংলা একাডেমির কল্যাণে, গবেষণামুলক বিভিন্ন কিছু রয়েছে। নজরুলের জীবনে নানা ধরনের ঘটনা এই কুমিল্লাতেই সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। আমরা যারা বাংলা ভাষায় কথা বলি এজন্যই আমরা বাঙালি। আশায় একমাত্র জাতিসত্ত্বার নিয়ামক, কর্মে নই।
বাঙালির সংস্কৃতির চিন্তা ভাবনায় আরো তথ্য ভাবনার প্রয়োজন। নজরুল যে আধুনিক সেটা যদি সনাক্ত করতে না পারি তাহলে সেটা আমাদের করতেই হবে। বল মহা বিশ্বের মহাকাশ পাড়ি, চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি।”
আলোচকের বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ মওলা তার বক্তব্যে তুলে ধরেন, ” কাজী নজরুল কুমিল্লা এসে জনজীবনকে আলোড়িত করেছিলেন। তেমনি কুমিল্লাকে বাদ দিয়ে কাজী নজরুলের জীবন কল্পনা করা যায় না। সর্বমোট তিনি কুমিল্লায় ৩৩৪ দিন অবস্থান করেছিলেন। কুমিল্লায় এসে নজরুল দুইটি মেয়েকে ভালবেসে ছিলেন। কাজী নজরুল তার সাহিত্য জীবন ও নজরুল রচনা পড়তে গেলে আমাদের মনের জানালায় উকি দেয়। তার প্রেমিক সত্ত্বা আমাদেরকে আবেগআপ্লুত করে তোলে। নজরুল ছিলেন সমকালমগ্ন কবি।
এছাড়া আলোচকের বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. জি এম মনিরুজ্জামান তার ভাষাতেই নজরুলকে যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন
“কাজী নজরুল ইসলাম ভারতবর্ষে হিন্দু মুসলিম উভয় জাতির মধ্যে কোন ভেদাভেদ খোঁজে পাননি। তার রাজনৈতিক গান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সমকালে সেই গান রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ করতেন। কাজী নজরুলের গান শুনে বিচলিত হয়ে পড়তেন বিখ্যাত ব্যক্তিগণ। নজরুল এমন গান গাইতেন যেন আগুন ছুটিয়ে দিতেন। প্রত্যক্ষভাবে বলা যায় যে নজরুল ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন, তিনি অন্যায়ের বিরোধিতা করেছিলেন, তিনি জেলে না গেলে তিনি কখনো লিখতে পারতেন না এমন প্রানবন্ত লিখা। নজরুল অসাম্প্রদায়িকতার কবি।
উল্লেখ্য, বাংলা বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ওয়েবিনারের শেষ দিন আমন্ত্রিত বিভিন্ন অতিথিবৃন্দ সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।