ডেস্ক রিপোর্টঃ
একজন নয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার মুক্তিযোদ্ধা বাবার হামলাকারী ছিল দুজন। কালো মুখোশধারী হামলাকারীদের একজন ছিল পিপিই পরা। ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ইতোমধ্যে দুজনকে শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হামলাকারীরা পূর্ব পরিচিত নয় বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।
ইউএনও ওয়াহিদার আহত বাবার কথার সূত্র ধরে হামলাকারীকে ধরতে মাঠে নামে পুলিশ। সংগ্রহ করা হয় সিসিটিভির ফুটেজ। এরপর যৌথভাবে ফুটেজ বিশ্লেষণ শুরু করে র্যাব, পুলিশ, সিআইডিসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা।
ওয়াহিদা খানমের বাবা ওমর আলী শেখ জানিয়েছিলেন, ‘বুধবার দিবাগত রাত ৩টা-সাড়ে ৩টার দিকে মেয়ের চিৎকার শুনে ওপর তলায় যাই। গিয়ে দেখি মুখোশধারী এক ব্যক্তি মেয়ের কাছে চাবি চাচ্ছিলো। টাকা-পয়সা ও গহনা কোথায় তা জানতে চাচ্ছিল বারবার। তথ্য না দিলে আমার নাতিকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছিল ওই ব্যক্তি। একপর্যায়ে আমি তাকে ধরে ফেলি। এ সময় তার সঙ্গে আমার ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তখন হাতুড়ি দিয়ে আমার ঘাড়ে আঘাত করলে মেঝেতে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যাই। এরপর কি হয়েছে আমি বলতে পারি না।’
সিসিটিভির ফুটেজে হামলায় দু’জনের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া যায়। তাদের একজন ছিল পিপিই পরা। মই বেয়ে ভেন্টিলেটর দিয়ে ইউএনওর রুমে প্রবেশ করে এদের একজন। রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাড়ির ভেতরে দুইজনকে এখন পর্যন্ত আমরা দেখেছি। একজন পিপিই পরা ছিলো। দু’জনকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। এখানে যাদেরকেই আরো পাবো আমরা আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করবো।’
তবে কেন এই হামলা, তা এখনই বলতে পারছেন না পুলিশ কর্মকর্তারা। তদন্ত বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় এর বেশি কিছু বলতেও রাজি নন তারা। দেবদাস ভট্টাচার্য আরো বলেন, ‘এটা বলা যাবে না। এখন যদি মন্তব্য করি এটা তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করবে। আমরা সবগুলো বিষয়কেই মাথায় রাখবো।’
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের ধারণা হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত। তিনি বলেন, ‘আমি তার ইউএনও ওয়াহিদার বাসা পরিদর্শন করে যতটুকু অনুমান করলাম যে এটা আসলে ডাকাতির উদ্দেশ্যে করা হয়নি। এটা হত্যার উদ্দেশ্যেই হয়েছে।’
তবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন হামলাকারীরা ইউএনও বা তার বাবার পূর্ব পরিচিত নন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে ওয়াহিদা খানম কিছুই বলতে পারছেনা, কারা ঢুকেছিলো ও কী উদ্দেশ্য ছিলো তাদের। কেই তাদের চেনেনা, এমন কোন শত্রু বা কেউ ছিলো না যে তাকে এভাবে আক্রান্ত করতে পারে।’
এদিকে, হামলার ঘটনায় নৈশপ্রহরী পলাশকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। সংবাদঃ ডিবিস