লিখেছেন : সুকৃতি ভট্টাচার্য্য
পর্ব -১ রাঙ্গামাটি, পার্বত্য জেলাঃ
সকল শ্রেণীর মানুষ নিজ দায়িত্ব কর্তব্যের পরিসর তৈরি করার পরিবর্তে অন্যের ত্রুটি চর্চায় থেকে ক্ষোভের অগ্নি স্ফুলিঙ্গ তুলতে থাকার প্রবণতা বেশি। সবাই নিজের মহৎ কর্মের ওপর যেমন আস্থা রাখবে, তেমনি অন্য লোককে মহৎ কর্মে অনুপ্রেরণা দান করেই মানসিক প্রশান্তি লাভের চেষ্টা করতে হবে আর সেই জন্যই সাহিত্য চর্চা অপরিহার্য।
আমরা মানুষ আমাদের প্রত্যেকেরই একটি পারিবারিক পরিচয় রয়েছে। তার সাথে রয়েছে ধর্মীয়, সামাজিক, জাতীয়, পেশাগত ও সাংস্কৃতিক পরিচয় সহ নানা ধরনের বিশেষণ সম্পূর্ণ পরিচয়। আরও একটি বড় পরিচয় হচ্ছে আমরা বাংলাদেশ নামক স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি দেশের নাগরিক।
কোনো না কোনো পেশার সাথে সম্পৃক্ত থেকে জীবনের চাকা সচল রাখার সাথে উৎকর্ষিত জীবনের স্বপ্ন দেখেই প্রতিটি মুহূর্ত পার করছি। মানবিক চেতনায় অন্যের কষ্ট অনুভূতিগুলো, প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম রুচি সম্মত পরিবেশ সমুন্নত রাখার চেষ্টা করি।
সৃষ্টিশীল কর্মের সাথে সম্পৃক্ত থেকে শান্তি সমৃদ্ধির পথ খোঁজাই আমাদের কর্তব্য।
আর তা সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে সিংহ ভাগ হয়ে থাকে। মানুষের মনে যে কোন কারণে যেকোনো মুহূর্তে ক্ষোভের উদগরন হতেই পারে।
তবে যারা শান্তি, সভ্যতা ও শৃঙ্খলার দোহাইতে সেই ক্ষোভ প্রশমিত করে স্বাভাবিক থাকতে পারেন, তারাই উঁচু মাপের সাহিত্যিক। ভালবাসার প্রকাশ পদ্ধতি ধর্ম পালন, দেশাত্তবোধ চর্চা ও খাবার রুচি সম্মত ঐক্যচর্চা সব সুশীল উদ্যোগই সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত।
মধুর ব্যবহার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা মানুষের মাঝে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে শালীন ও শান্তিপূর্ণ জীবন উপভোগের জন্য দরকার হয় সুস্থ সুন্দর সামাজিক পরিবেশ যা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ছাড়া কখনো গড়ে উঠা সম্ভব নয়।
তবে মনে প্রাণে পরিশুদ্ধিতে জীবন নির্বাহের চেষ্টা বা প্রবৃত্তি থাকাটাই হবে একজন ভালো মানুষের পরিচয়। সাহিত্য চর্চায় মানুষের মহৎ ও ত্যাগের ভূমিকা দৃষ্টি সম্মুকে নিয়ে এসে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা করাই হতে পারে সুন্দর ও রুচিশীল মনোবৃত্তি। প্রকৃতপক্ষে মানুষ মনের দিক থেকে কাছাকাছি আসতে পারে। মানসিক প্রশান্তির অন্যতম মাধ্যম হলো সাহিত্য চর্চা। মানুষের সুখ দুঃখ ও ভালোবাসার কথা বিনিময় করা অনেকটাই সহজসাধ্য।
জ্ঞানের গভীরে পৌঁছতে হলে সব ধরনের বই পড়ার বিকল্প পথ আছে বলে মনে হয় না। তবে কোন ধরনের বই পড়া বেশি প্রয়োজন? গল্প, রূপকথা, কবিতার বই, সত্য ইতিহাস নির্ভর বই, ধর্মীয় বিষয়ের উপর অনুপ্রেরনা মূলক গল্প কাহিনী পড়া উচিত বলে আমি মনে করি। সাহিত্য বা কবিতার বই পড়ে পাঠক অবশ্যই কিছুটা হলেও জ্ঞানের রহস্য জগতের দ্বার উন্মোচেরন মানসিকতা অর্জন করতে পারেন। শান্তিপূর্ণ ও রুচিশীল জীবন চর্চায় সময় পার করা যেতে পারে। বই পাঠকের মনে সভ্যতার আবেশ দিতে পারে।
সংযম অনুসরণের বাণী ও কবিতা পাঠে মনে স্বস্তিবোধ ও আনন্দিত হওয়া যায়। মাদকাসক্ত বিরাট যুবসমাজ আজ ধ্বংসের পথে, সেই পথ থেকে উত্তোরনের উপায় হিসেবে সাহিত্য অনন্য ভূমিকা রাখতে পারে।
যুব সমাজকে সাহিত্য চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। প্রকৃতির রূপ সৌন্দর্য আবার কদর্য ও ফুটে উঠে সাহিত্যের মাধ্যমে। বসন্তের হরেক রকম সৌন্দর্য আমাদের যে মুগ্ধতা আনে তা শুধু সাহিত্যের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। নারী পুরুষের প্রেম রসায়ন মাত্রিক ও বিনাদন মূলক হলে সাহিত্য পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়বে। সুশীল মন তৈরিতে সাহিত্য সংস্কৃতি ও মরমী আবেশের প্রয়োজন রয়েছে তাই সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে গড়ে উঠে উদারতা, আন্তরিকতা, সংযম, সংস্কার, মনস্কতা রুচিশীল জীবন চর্চা। তাহলেই আদর্শ পাঠক সমাজ গড়ে উঠবে।